গ্রিন টি পান করলে বেড়ে যায় মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা

কাউকে চা অফার করলে না করবে— এমন মানুষ কিন্তু খুবই কম। বিশ্বজুড়ে চা শুধু একটি জনপ্রিয় পানীয়ই নয়, পাশাপাশি চা নিয়ে সবার একটি আলাদা ইমোশনও কাজ করে। সকাল থেকে রাত, বিভিন্ন সময়ে নানা কারণে চা খান অনেকে। দুধ চা থেকে লাল চা। বিভিন্ন রকমের চায়ের চল রয়েছে। তবে শুধু স্বাদ নয়, স্বাস্থ্যের কথা ভাবলে খেতে হবে একটু অন্যরকমের চা গ্রিন টি। বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা এড়াতে সাহায্য করে গ্রিন টি। এতে রয়েছে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্লোরোফিল ও পলিফেনল।

বর্তমানে যারা স্বাস্থ্য সচেতন, তাদের কাছে গ্রিন টি এর জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। খুবই কম ক্যালরি সম্পন্ন এবং বিভিন্ন বেনিফিটসে ভরপুর এই একটি মাত্র পানীয় শরীরে ম্যাজিকের মরত্ কাজ করে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক গ্রিন টির উপকারিতা সম্পর্কে।

মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়

২০২২ সালের স্টাডিতে দেখা গেছে নিয়মিত গ্রিন টি পান করার ফলে ব্রেইন খুব ভালোভাবে ফাংশন করতে পারে। অন্য আরেকটি স্টাডিতে দেখা গেছে, এটি পান করার ফলে ৫০-৬৩ বছর বয়সি মহিলাদের ওয়ার্কিং মেমোরি ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি পায়। এটিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং এল থিয়ানাইন মেমোরি ইমপ্রুভ করতে সাহায্য করে।

দুশ্চিন্তা ও স্ট্রেস কমায়

বর্তমানে মানুষ যে সমস্যাটিতে অনেক বেশি ভুগছেন তা হলো দুশ্চিন্তা ও স্ট্রেস। এ ক্ষেত্রে গ্রিন টি কিন্তু বেশ উপকারী। কারণ এতে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড স্ট্রেস কমায় এবং আমাদের রিলাক্সড ফিল করতে সাহায্য করে। এতে করে রাতের ঘুমও বেশ ভালো হয়।

ওজন কমাতে সাহায্য করে

বর্তমানে গ্রিন টি যে এত জনপ্রিয় তার একটি বড় কারণ হলো— ওয়েট লস করতে এটি বেশ হেল্প করে। কারণ গ্রিন টিতে ক্যাটেচিন নামক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে, যেটি আমাদের বডি ফ্যাট ব্রেক ডাউনে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে এটি মেটাবলিক রেট বাড়িয়ে দেয়। এ কারণে যদি প্রোপার ডায়েট ও এক্সারসাইজ করার পাশাপাশি নিয়মিত গ্রিন টি পান করা হয়, তাহলে দ্রুত ওজন কমে।

কোলেস্টেরল কমায়

গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রিন টি লো ডেনসিটি কোলেস্টোরেল বা ব্যাড কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। এ ছাড়া হৃদরোগ জনিত বিভিন্ন সমস্যা উপশম করতেও গ্রিন টি এর ভূমিকা রয়েছে।

হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে

গ্রিন টি গ্যাসট্রোইনটেস্টিন্যাল বা ডাইজেশনজনিত যে কোনো সমস্যা যেমন, গ্যাস, ব্লোটিং, আইবিএস ইত্যাদিতে বেশ ভালো কাজ করে। পাশাপাশি এটি গাটে ভালো ব্যাকটেরিয়া বিফিডোব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বাড়ায়।

ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে

টাইপ ২ ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে দারুণ কাজ করে গ্রিন টিতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। রিসার্চে দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন গ্রিন টি পান করেন, তাদের টাইপ টু ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কিছুটা কম থাকে। তা ছাড়া অতিরিক্ত ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণেও গ্রিন টির উপকারিতা রয়েছে।

ইনফ্ল্যামেশন রেট কমায় এবং বোন হেলথ ইমপ্রুভ করে

গ্রিন টির অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি প্রোপার্টিজ আমাদের শরীরের ইনফ্ল্যামেশন রেট কমিয়ে আনে৷ এই চায়ের আরেকটি কার্যকরী দিক হলো— এটিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের বোন ফরমেশন ও বোন ম্যাস লস প্রতিরোধ করে।

ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়

গবেষণায় এসেছে, যারা প্রতিদিন এক কাপ গ্রিন টি পান করেন, তাদের ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। গ্রিন টিতে থাকা পলিফেনল স্কিনকে ইউভি রেডিয়েশন থেকে রক্ষা করে, যা ইউভি ইনডিউসড স্কিন ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। ২০২০ সালের স্টাডি রিভিউ অনুযায়ী, গ্রিন টির ক্যাটেচিন উপাদান ব্রেস্ট, কোলেরেক্টাল, ইসোফেগাল, লাংস, প্রোস্টেড এবং লিভার ক্যানসারের রেট কমাতে সাহায্য করে।