আজিজুর রহমান শায়েল, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ১নং ধর্মঘর ইউনিয়নের দত্তপাড়া এলাকার গৃহিণী দিলরুবা খাতুন। তিনি দত্তপাড়া এলাকার মোঃ আবু জুয়েনের স্ত্রী।
শুরুতেই ১৬ শতাংশ জমির উপর সবুজ মাল্টা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। ইতিমধ্যে বাগান জুড়ে শোভা পাচ্ছে রাশি রাশি সবুজ রংয়ের মাল্টা ফল। এই বছর লক্ষাধিক টাকার মাল্টা বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী।
সরেজমিনে গেলে দিলরুবা খাতুন জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের তত্বাবধানে গত ৪ বছর পূর্বে বাড়ীর পাশে ১৬ শতাংশ জমিতে ভাল ও উন্নত জাতের মাল্টা ছাড়া রোপন করি।
এই বাগানে বর্তমানে প্রায় ৫৪টি মাল্টা গাছ রয়েছে। গত বছর থেকে আমার মাল্টা গাছে ফল ধরতে শুরু করে। গত বছর প্রায় ৮০ হাজার টাকার মাল্টা ফল বিক্রি করি। এই বছর আমার মাল্টা বাগানে ফলন বেশ ভাল হয়েছে। গতবারের তুলনায় এ বছর বিক্রিও বেশি হবে বলে আশাবাদী। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বাগান থেকে মাল্টা ফল কিনে নিচ্ছে ১২০ টাকা থেকে ১৫০ ধরে। মাল্টার রং সবুজ ও এর স্বাদ সুমিষ্ট হওয়ায় চাহিদাও রয়েছে ভাল। কিন্তু এই বছর অতিবৃষ্টির কারণে মাল্টা গাছের নিছে পানি জমাট বাধায় গাছ থেকে ফল ঝরেছে পরে কৃষি অফিসের পরামর্শে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করি। কিছুটা ক্ষতি হলেও পুষিয়ে নেয়া যাবে।
সবুজ মাল্টা চাষ করে সফলতার মুখ দেখছেন দিলরুবা খাতুন। মাল্টা হার্বেস্ট এর উপযুক্ত সময় সেপ্টেম্বর অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত। গাছ পরিপক্ক হতে ৩/৪ বছর সময় লাগে এবং পরিপক্ক গাছে ফেব্রুয়ারিতে ফুল আসা শুরু করে।একটি গাছে ১৫০/২০০ টি মাল্টা ধরতে পারে। ফলন ভাল হলে ৪/৫ টি মাল্টায় ১ কেজি ওজন হয়। মাল্টা গাছে সাধারণত রোগবালাই কম হয় তবে একটি রোগ মারাত্মক হতে পারে সেটি হচ্ছে গ্রিনিং রোগ এছাড়াও মাঝে মধ্যে ছত্রাকের আক্রমণ হয়।তবে প্রয়োজনীয় কীটনাশক ব্যবহার করলে রোগবালাই হয় না। গাছের গোড়ায় যাতে পানি জমাট বাধতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
দিলরুবা খাতুনের মাল্টা বাগান দেখে মাধবপুরের অনেকই মাল্টা বাগান তৈরির আগ্রহ প্রকাশ করছেন।স্থানীয় বাবুল মিয়া বলেন, খবর শোনার পর আমি বাগানটি পরিদর্শনে যাই। সেখান থেকে কাঁচা অবস্থায় মাল্টা রস করে খেয়েছি স্বাদ খুব ভাল। একজন নারী চাষী সাহস নিয়ে এত বড় বাগান গড়ে তুলেছে, দেখে খুব মুগ্ধ হয়েছি।
মাধবপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্মকর্তা আল মামুন হাসান বলেন,আমাদের তত্ত্বাবধায়নে নারী চাষী দিলরুবা মাল্টার চাষ করেছে। শুরু থেকে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছি। পুরোপুরি উৎপাদন শুরু হয়েছে এলাকার চাহিদার পাশাপাশি উপজেলার চাহিদার কিছুটা হলেও পূরণ করতে সক্ষম হবে।তাছাড়া আশপাশের এলাকার চাষীরা মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে