আদালতের বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শন করছে শিক্ষার্থীরা: ওবায়দুল কাদের

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা আইনি পন্থায় না গিয়ে জনজীবনকে জিম্মি করে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শন করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, এটি সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত ও বেআইনি।

আন্দোলনকারীদের অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। শিক্ষার্থীদের জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী সব রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধ করে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী অবিলম্বে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। সর্বোচ্চ আদালতের বিচারিক কার্যক্রম পুরোপুরি সমাপ্তি না হওয়া পর্যন্ত সব পক্ষকে ধৈর্যধারণ করতে বলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা বুধবার শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরে সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি সম্মান রাখার আহ্বান জানিয়েছিলাম। জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি হতে পারে, তা পরিহারের আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু আমরা লক্ষ করছি, বিষয়টি নিয়ে যখন বিজ্ঞ আদালতের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আছে, এর প্রতি কোনো রকম সম্মান প্রদর্শন না করে তথাকথিত বাংলা ব্লকেডের কর্মসূচি দিয়ে মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত করার চেষ্টা করছে।

সুপ্রিমকোর্টকে পবিত্র সংবিধানের অভিভাবক বলে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই সংবিধানই দেশের সর্বোচ্চ আইন। সর্বোচ্চ আদালত যখন সরকার পক্ষ, আন্দোলনকারী ও মামলাকারী সবার বক্তব্য শুনে এ বিষয়ের চূড়ান্ত বিচারিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে, ঠিক সেই মুহূর্তে আন্দোলনের নামে জনগণের চলাফেরায় বাধা সৃষ্টি বেআইনি। তারুণ্যের শক্তি এবং আবেগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কিন্তু এই শক্তি ও আবেগকে পুঁজি করে কোনো অশুভ মহল যদি দেশে অরাজক পরিস্থিতি ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চায়, তাহলে সরকার আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। যারা কোটা আন্দোলনকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ দিতে চায়, তাদের খায়েশ পূরণ হতে দেব না।

কোটা আন্দোলনে দল হিসাবে আওয়ামী লীগের অবস্থান কী-এমন প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা পরিষ্কার বলেছি, এ আন্দোলনকে কেউ যদি রাজনৈতিক ফাঁদে ফেলতে চায়, সেটাকে আমরা রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করব। বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক ফাঁদে ফেলে তাদের অতীতের আন্দোলনের ব্যর্থতা পেছনে রেখে নতুন করে আন্দোলন করার পাঁয়তারা করছে। তারা কোটাবিরোধী আন্দোলনকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছে।

শিক্ষকদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো যোগাযোগ হচ্ছে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই, এমনটি না। আমরা সতর্কভাবে বিষয়টি দেখছি, আমার বিশ্বাস, অচিরেই বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে। সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।