স্পোর্টস ডেস্ক: টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শারজাহতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে মোহাম্মদ নাঈম ও মুশফিকের ব্যাটে চ্যালেঞ্জিং স্কোর করতে পেরেছে বাংলাদেশ। ২০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৭১ রান।
টসে হেরে ব্যাট করতে নেমেও শুরুটা দারুণ হয় মাহমুদউল্লাহদের। ওপেনিং জুটি বরাবরই হতাশ করে দলকে। বিশ্বকাপের মূল পর্বে সে ধারা থেকে বের হতে পারলো টাইগাররা। মোহাম্মদ নাঈম ও লিটন দাসের সতর্ক শুরুর কারণেই এমনটি হয়।
প্রথম চার ওভারে দলের চার পেসারকে ব্যবহার করে শ্রীলঙ্কা। তবে উদ্বোধনী জুটি ভাঙতে করতে পারেনি তারা। রানের গতি খুব বেশি না হলেও বাংলাদেশকে স্বস্তির শুরু এনে দেন দুজন। ৪ ওভারে বাংলাদেশের রান ২৯, উইকেট পড়েনি । চলতি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা উদ্বোধনী জুটি এটিই। প্রথম পর্বের তিন ম্যাচে শুরুর জুটির সর্বোচ্চ রান ছিল ১১।
পাওয়ার প্লেটা উইকেশূন্য রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। ৫.৫ ওভারে প্রথম উইকেটের পতন। বিদায় নেন লিটন দাস। নাঈম একটু আগ্রাসী থাকরেও লিটন ছিলেন ধীরলয়ে। ১৬ বলে দুই চারে ১৬ রান করে তিনি ফেরেন সাজঘরে।
লাহিরু কুমারার বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে জায়গা বানিয়ে লফটেড অফ ড্রাইভ খেলেন লিটন। কিন্তু বলের নিচে যেতে পারেননি। তাই মিড অফ ফিল্ডারের নাগালের বাইরে রাখতে পারেননি বল। মারে ছিল না তেমন জোর। একটু লাফিয়ে ক্যাচ নেন লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকা। আগের তিন ম্যাচে লিটনের রান ছিল ৫, ৬ ও ২৯।
পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে বাংলাদেশের রান ১ উইকেটে ৪১ রান। ক্রিজে আসেন এরপর সাকিব আল হাসান। এসেই পরের ওভারে আসালাঙ্কাকে দুই বাউন্ডারি মেরে নিজেকে জানান দেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। কিন্তু আফসোস, ঠিক তার পরের ওভারেই সাজঘরে ফেরেন সাকিব।
আগের দুই ম্যাচে দলের জয়ে ব্যাট হাতে বড় অবদান রাখা সাকিব আউট হয়ে যান ৭ বলে ১০ করে। চামিকা করুনারত্নের বলটি ছিল দারুণ লেংথে। সাকিব ফ্লিক আর পুল শটের মাঝামাঝি কিছু করতে চেষ্টা করেন। তবে বলটি তত শর্ট ছিল না। বল স্কিড করে উড়িয়ে দেয় বেলস। বোল্ড সাকিব। উল্লাসে মেতে ওঠেন করুনারত্নে। ৭.৪ ওভারে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ৫৬।
রানের মধ্যে থাকা নাঈম এরপর দেখা পান ফিফটির। কুমারাকে মাথার ওপর দিয়ে চার মেওে পঞ্চম পূর্ণ করেন ৪৪ বলে, চারটি চারে। টি-টোয়েন্টিতে ২৫ ম্যাচে তার চতুর্থ ফিফটি এটি, চলতি বিশ্বকাপে তিন ম্যাচে দ্বিতীয়। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ফিফটি করেন নিজের প্রথম ম্যাচেই। ব্যক্তিগত ৪৬ রানে অবশ্য তিনি আউট হতে পারতেন। তবে সরাসরি থ্রোয়ে বল স্টাম্পে লাগাতে পারেননি আভিশকা ফার্নান্দো।
মুশফিকের সঙ্গে নাঈমের জুটিটা বেশ জমে যায়। এই জুটি দলকে নিয়ে যান ১২৯ রান পর্যন্ত। ব্যক্তিগত ৬২ রানে থামেন মোহাম্মদ নাঈম। ফার্নান্দোর বলে তার হাতেই ক্যাচ দেন তিনি। ৫২ বলের ইনিংসে নাইম হাকান ছয়টি চার। অবশ্য নেই কোন ছক্কা।
নাঈম বিদায় নিলেও রানের গতি কমেনি। জ¦লে উঠেন মুশফিক। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে রানের গতি বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে টি টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ফিফটির দেখাও পান তিনি। ৩২ বলে তিনি স্পর্শ করেন পঞ্চাশ। কিন্তু অপর প্রান্তে থাকা আফিফ হোসেন নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। ৬ বলে মাত্র সাত রান করে তিনি রান আউট। তার ইনিংসে ছিল একটি চারের মার।
শেষের দিকে রানের গতি বেশ বাড়িয়েছেন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। ৩৭ বলে ৫৭ রানে অপরাজিত থাকেন মুশফিক। তার ইনিংসে ছিল পাচটি চার ও দুটি ছক্কা। ৫ বলে দুই চারে ১০ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। বল হাতে শ্রীলঙ্কার হয়ে একটি করে উইকেট নেন চামিকা, বিনুরা ও লাহিরু।
বাংলাদেশ একাদশ: মোহাম্মদ নাঈম শেখ, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, শেখ মেহেদি হাসান, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, মুস্তাফিজুর রহমান, নাসুম আহমেদ।