আলোকিত রিপোর্ট:
মাদক মামলায় ঢাকাই সিনেমার আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনিকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ডে পাঠানোর ক্ষেত্রে ঢাকার দুই মহানগর হাকিমের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কেএম জাহিদ সারওয়ার কাজলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার বলেছেন, দুই হাকিমের একজন তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মাদকের ভয়াবহতার কথা লিখেছেন। আর রিমান্ড মঞ্জুরের ক্ষেত্রে যে ত্রুটি হয়েছে, অন্য হাকিম তা ‘বিশ্বাসই করেন না’।
বনানী থানার মাদকের মামলায় পরীমনিকে দ্বিতীয় দফায় দুদিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেছিলেন ঢাকার মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস। পরে একই মামলায় মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম তৃতীয় দফায় আরও একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
কী কী তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে পরীমনিকে শেষ দুই দফা রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছিল, দুই হাকিমের কাছে সেই ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।
জামিনসংক্রান্ত রুল ও রিমান্ডের বৈধতা প্রশ্নে স্বতঃপ্রণোদিত রুল জারির এক আবেদনের শুনানিতে হাইকোর্টের এই বেঞ্চ গত ২ সেপ্টেম্বর এ আদেশ দেন। দুই হাকিমকে ১০ দিনের মধ্যে তাদের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
সে অনুযায়ী দুই মহানগর হাকিম তাদের লিখিত ব্যাখ্যা সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রারের দপ্তরে জমা দেন। সেই ব্যাখ্যা বুধবার হাইকোর্টে উপস্থাপন করা হলে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম দুই ম্যাজিস্ট্রেটের দাখিল করা ব্যাখ্যার অংশ পড়ে শোনান।
তিনি বলেন, রিমান্ড নিয়ে হাইকোর্ট ও সুপ্রিমকোর্টের যে গাইডলাইন এবং আমাদের প্রচলিত আইন আছে, তারা এগুলোর বিরুদ্ধে। যে কারণে আমরা তাদের জবাবে আমরা সন্তুষ্ট নই।
‘এই মামলায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ড মঞ্জুর করার ক্ষেত্রে আমরা সন্তুষ্ট নই, যে কারণে পরবর্তী আদেশের জন্য ২৯ সেপ্টেম্বর তারিখ রাখলাম।’
দুই মহানগর হাকিমের মধ্যে একজন পরীমনিকে রিমান্ডে পাঠানোর সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দেখাতে গিয়ে এলএসডি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের আত্মহত্যা এবং ওই মাদকের ভয়াবহতা তুলে ধরেন।
সেটি পড়ে শুনিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম বলেন, আমরা তাকে শোকজ করেছি— কেন তিনি রিমান্ড মঞ্জুর করলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন ছাত্র আত্মহত্যা করেছে সেটির বর্ণনা দিলেন।
এর পর তিন দফায় মোট সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয় পরীমনিকে। প্রথম দফায় ৫ আগস্ট চার দিন, দ্বিতীয় দফায় ১০ আগস্ট দুদিন এবং ৩য় দফায় ১৯ আগস্ট একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয় তার। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন