সিংগাইরে শেষ সময়ে দুর্গাপূজার প্রতিমার গায়ে রং আর তুলির আঁচড় দিতে ব্যস্ত মূর্তি কারিগররা
আগামী ১ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে বাঙালি হিন্দুধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে এ উৎসব শেষ হবে ৫ অক্টোবর। এ উপলক্ষে মানিকগঞ্জের সিংগাইরে প্রতিমা তৈরি শেষ করে এখন চলছে রংতুলির আঁচড়ে সাজিয়ে নেওয়া ও সাজসজ্জার শেষ পর্যায়ের কাজ। এসব কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন মূর্তির কারিগররা।
পূজা উদযাপনের সঙ্গে জড়িত অনেকেই মনে করছেন এ বছর করোনার বিধি নিষেধ না থাকলেও বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরকারের বিধিনিষেধের কারণে আলোকসজ্জায় কিছুটা ঘাটতি থাকলেও আনন্দের কোনো ঘাটতি থাকবে না।
জানা গেছে এবছর উপজেলায় ৬৭টি মন্ডুপে পূজা উদ্যাপন করা হবে। গত দুই বছর করোনার কারণে বিধিনিষেধের মধ্য দিয়ে সীমিত পরিসরে উৎসবটি পালন করা হয়। তাই এবারের আয়োজন হচ্ছে বেশ ঘটা করে। এক মাস ধরে মন্ডুপগুলোতে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ।
এন্ডুপে মন্ডুপে দুর্গাদেবীর প্রতিমার সঙ্গে শোভা পাচ্ছে গণেশ, সরস্বতী, লক্ষ্মী, অসুর, সিংহ, মহিষ, মহাদেব ও কার্তিকের প্রতিমা। সিংগাইরের বিভিন্ন মন্দিরে প্রতিমায় রংসহ অন্যান্য কাজ করছেন নিরাঞ্জন অরুন, নিমাই চন্দ্র ও দেবাশিষ ও তাঁর সহযোগীরা। কথা বলার ফুরসত নেই তাঁদের। এরপরও তারা জানান- আমরা প্রতি বছর প্রতিমা তৈরির কাজ করে থাকি। এ বছর করোনা পরিস্থিতি ভালো হওয়ায় সবাই বেশ ভালোভাবেই পূজার প্রস্তুুতি নিয়েছেন। সে কারণে প্রতিমা তৈরির কাজও বেড়েছে। এবার বেশ কয়েকটি মন্দিরের প্রতিমা তৈরি করছি। এছাড়াও লক্ষ্য করা গেছে সিংগাইরে স্থানীয় কারিগর ছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত কারিগররা প্রতিমা তৈরি করছেন।
উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. ইতি রানী সাহা বলেন- করোনার কারণে গত দুই বছর সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সীমিত আকারে দুর্গাপূজা করেছি। এবার যেহেতু করোনার তেমন প্রকোপ নেই, তাই ভালোভাবেই দুর্গাপূজা উদযাপনের প্রস্তুুতি নিয়েছি।
দুর্গাপূজা উদযাপন সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে ইতিমধ্যে সিংগাইরে গত ২৪ সেপ্টেম্বর এক মতবিনিময় সভা করেছেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান। ওই সভায় তিনি জানিয়েছেন- না বুঝে মিথ্যা বক্তব্য ফেসবুকে, টুইটারে ও হোয়াট’সঅ্যাপে সংবাদ প্রকাশ করলে এবং তা যদি মিথ্যা প্রমানিত হয় সে দায়িত্ব তার নিতে হবে। আমরা বিন্দু মাত্র ছাড় দিব না। কেউ গুজবে কান দিবেন না। মসজিদ, মন্দিরে হামলা করে কেউ বেহেস্তে যেতে পারে না। আপনারা সন্দুর, সুষ্ঠ, মনোরম পরিবেশে আপনারা পূজা উদযাপন করবেন ।
এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার অফিসার ইনচার্জ সফিকুল ইসলাম মোল্যা বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যাতে নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপন করতে পারেন সেজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। টহল পুলিশ, পোশাকধারী পুলিশ ও সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এছাড়া প্রতিটি মন্দিরে পুলিশের পাশাপাশি আনসার ও গ্রামপুলিশ মোতায়েন করা হবে।