কোনো ষড়যন্ত্রই দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে থামাতে পারবে না : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় নেতাকর্মীদের সরকারের উন্নয়নমুলক কর্মকাণ্ড দেশবাসীর সামনে তুলে ধরার আহবান জানিয়ে বলেছেন, কোনো ষড়যন্ত্রই দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে থামাতে পারবে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগতি ব্যাহত করার অনেক ষড়যন্ত্র আছে। কিন্তু উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য গতিকে কেউ বাধাগ্রস্থ করতে পারবে না ইনশাল্লাহ।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে অনেক চক্রান্ত চলছে। আমি বিশ্বাস করি যত চক্রান্তই করুক বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি অপ্রতিরোধ্য গতিতে, ইনশাল্লাহ এগিয়ে যাব।’

তিনি বলেন, ‘ঝড়-ঝাপটা এবং আন্তজাতিক পরিবেশের কারণে অনেক কিছুই মোকাবিলা করতে হবে। আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে যেমন চলি তেমনি বৈশ্বিক যে দুর্যোগ সেটাও মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে পারবো, সে বিশ্বাস আমার আছে।’

প্রধানমন্ত্রী আজ বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি’র ভাষণে এ কথা বলেন।

তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে রাজধানীর ফার্মগেটস্থ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগকে আজ এটাই বলবো তোমাদের কাজ হবে আমরা যে মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি, যে উন্নতি দেশের হয়েছে, শিক্ষার দ্বার অবারিত হয়েছে, বহুমুখি শিক্ষার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি, কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করেছি সেই সাথে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি- এসব দেশবাসীর সামনে তুলে ধরা। আমরা মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপন করেছি, গ্রামে গ্রামে ব্রডব্যান্ড সেবা পৌঁছে দেয়ার মাধ্যমে ডিজিটাল ব্যবস্থপনায় মানুষের ঘরে বসে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, ফ্রিলান্সার সৃষ্টি হয়েছে। বেকারদের ব্যাপক কর্মসংস্থান হয়েছে, রাস্তা-ঘাট, পুল, ব্রিজ নির্মাণের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটিয়েছি- এই উন্নয়নের কথাগুলো মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। প্রত্যেকটি অঞ্চলে গিয়ে মানুষের কাছে বারবার বলতে হবে। কে কি বললো সেদিকে কর্ণপাত করার কোনো দরকার নেই। আমরা কি করেছি তা মানুষের কাছে তুলে ধরতে পারলে সেটাই হবে আসল জবাব।

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের ঘরে ঘরে বিদ্যুতের আলো পৌঁছে দেয়া, স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষাকে জনগণের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসার পাশাপাশি গৃহহীনকে ঘর করে দেয়ার উদ্যোগ তুলে ধরেন। দেশে কোনো গৃহহীন পরিবার থাকলে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকমীদের নিজ এলাকায় খুঁজে দেখার আহবান জানান তিনি। কারণ, সরকার সবাইকে ঘর করে দিবে। এ থেকে দলিত শ্রেণী পেশার মানুষ এমনকি হিজড়া ও বেদী শ্রেণীও বাদ যাচ্ছে না। তার সরকার তাদের রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনার থেকে সকলের জন্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের যে পরিকল্পনা সেটা থেকেই এটা করছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, কে কি বললো সেদিকে না গিয়ে আমরা মানুষের জন্য যে উন্নয়ন করেছি সেই উন্নয়নের কথাগুলো একেবারে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। বারবার বলতে হবে। এদিকে দৃষ্টি দিতে হবে এবং এই কাজটা করতে হবে।

আমরা বিস্মিত জাতি বিধায় এগুলো বারবার মানুষের কাছে তুলে ধরায় গুরুত্বারোপ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘ষড়ঋতুর দেশ আমাদের। দুই মাস পর পর ঋতু বদলায়, মানুষের মনও বদলায় এবং ভুলেও যায়। কাজেই দুই মাস পর ভুলে যেন না যায়, সে জন্য আমরা কি কাজ করেছি মানুষের কাছে বারবার সেটা বলতে হবে, বোঝাতে হবে। কারণ একটা শ্রেণী আছে যারা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়। এই জ্ঞানপাপীদের কথা শুনে অজ্ঞান হয়ে কেউ যেন বিভ্রান্ত না হয়।’

তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক লীগ যেভাবে মানুষের সেবায় নিয়োজিত রয়েছে সেভাবেই কাজ করে যাবে এবং সংগঠনকে সুসংগঠিত করে শক্তিশালী করার পাশাপাশি দুঃসময়ে যেভাবে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে তা আব্যাহত রাখবে। একটি সুশৃঙ্খল সংগঠন হিসেবে জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণে আর্তমানবতার সেবায় নিজেদের নিয়োজিত রাখবে এবং নিবেদিত প্রাণ হয়েই রাজনীতি করবে।’

স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন।

সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের গত এক বছরের কর্মকাণ্ড এবং সদ্য প্রয়াত দলটির সাবেক সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহের ওপর দুটি পৃথক ভিডিও চিত্র অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা হয়।

সূত্র : বাসস