আলোকিত স্বদেশ ডেস্কঃ
এখন ডেঙ্গুর মৌসুম।বর্ষাকালে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ দেখা দেয় বেশি। সতর্ক না হলে শিশু থেকে সব বয়সি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হতে পারেন। ডেঙ্গুর সবচেয়ে ঝুঁকি হচ্ছে রক্তের প্লাটিলেট কমে যাওয়া। শিশুসহ যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের এতে মৃত্যুঝুঁকি আছে । কীভাবে বুঝবেন শিশুর ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে-
জ্বরের লক্ষণ অনুসারে এ জ্বরকে তিনটি পর্যায়ে ভাগ করা হয়।
* প্রথম পর্যায় : তিন থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত জ্বর স্থায়ী হতে পারে।
লক্ষণগুলো হলো-
* তীব্র জ্বর (১০৩ ডিগ্রি থেকে ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট)।
* তীব্র মাথাব্যথা, বিশেষ করে কপালের দিকে।
* চোখের পেছনে ব্যথা, যা চোখের মণি ঘুরালে বাড়ে।
* পুরো শরীর ব্যথা এবং গিঁটে ব্যথা।
* বমিভাব বা বমি করা।
দ্বিতীয় পর্যায় : এ সময়ে জ্বর কমে যায়, কিন্তু রক্তক্ষরণ বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার আশংকা থাকে। যা দু’তিন দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। কখনো কখনো শুধু হাতের তালু, পায়ের তালু বা শরীরের ত্বকের নিচে লাল হয়ে যায় এবং চুলকায়।
শরীরের ভেতর রক্তক্ষরণ হওয়া বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার লক্ষণগুলো হলো-
* তীব্র এবং একটানা পেট ব্যথা।
* নাক-মুখ, দাঁতের মাড়ি বা ত্বকের নিচে রক্তক্ষরণ।
* বারবার বমি এবং সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
* খুব বেশি পিপাসা পাওয়া বা জিহ্বা শুকিয়ে যাওয়া।
* প্রস্রাব কমে যাওয়া।
* জ্বরের সঙ্গে শরীরে লাল লাল দাগ দেখা যাওয়া।
* চোখের সাদা অংশে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া।
* শরীর ঠান্ডা বা ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া।
* অতিরিক্ত ঘাম হওয়া।
বিশেষ লক্ষণগুলো হলো-
* ঘুম ঘুম ভাব, একটানা কান্না ও শ্বাসকষ্ট। এসব লক্ষণের যে কোনো একটি দেখা গেলেই শিশুকে দ্রুত ডাক্তার দেখাতে বা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
* তৃতীয় পর্যায় : অল্প ক’দিনের মধ্যে শিশু ভালো হয়ে যায়। যদিও শরীরে দুর্বল ভাবটা থেকেই যায় তারপরেও রোগী খেতে পারে, চলাফেরা করতে পারে। সব মিলিয়ে পুরো অসুস্থতার সময়টা ৭ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে।
প্রাথমিক চিকিৎসা ও পরিচর্যা
* শরীরের তাপমাত্রা ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইটের নিচে রাখতে চেষ্টা করুন। বারবার কুসুম গরম পানিতে কাপড় ভিজিয়ে শরীর মুছে দিন।
* জ্বর কমানোর জন্য শুধু প্যারাসিটামল ব্যবহার করুন (দিনে চার বারের বেশি নয়)। আইবুপ্রুফেন, এসপিরিন, ডাইক্লোফেন জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করবেন না। এগুলো রক্তক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়।
* শিশুকে বেশি করে পানি বা পানি জাতীয় খাবার দিন, যেমন-খাবার স্যালাইন, ডাব, স্যুপ, দুধ, ফলের রস এবং এসবের সঙ্গে অন্যান্য খাবার দিন।
* বারবার বমি হলে হাসপাতালে নিয়ে যান।
* রক্তক্ষরণজনিত কোনো সমস্যা দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিন।
ডেঙ্গু রোগ মশার কামড়ে ছড়ায়।বাড়ির আনাচে কানাচে ফুলের টব,টায়ার,ভাংগা বোতলে জমে থাকা পানিতে ডেঙ্গু মশার বিস্তার ঘটে। তাই, এগুলো সাধারণত বর্ষাকালে হয় যা মশার বেঁচে থাকা এবং প্রজনন উভয়কেই সাহায্য করে। বমি, পেট ব্যথা, অস্থিরতা বা অলসতা এবং যে কোনো স্থান থেকে রক্তপাতের মতো সতর্কতা চিহ্নসহ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত শিশুদের নিবিড় পর্যবেক্ষণের জন্য দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন।