মো. সাইফুল ইসলাম, ধামরাই (ঢাকা):
ঢাকার ধামরাই উপজেলায় ১১ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব দূর্গাপূজো । আর এই দূর্গাপূজোকে সামনে রেখে সারাদেশের মতো ধামরাইয়ের কারিগররাও ব্যস্ত সময় পার করছে দূর্গা প্রতিমা তৈরির কাজে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। ঘরে ঘরে দেবীদুর্গার আগমনী বার্তা। আর কিছুদিন পর শুরু হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বড় উৎসব দুর্গাপূজা। এজন্য মূর্তি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঢাকার ধামরাইয়ের মৃৎশিল্পীরা।
উপজেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা যায়, কাদা-মাটি, বাঁশ, খড়, সুতলি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিলতিল করে গড়ে তোলা দেবীদুর্গার প্রতিমা তৈরিতে দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা কারিগররা।
ধামরাই উপজেলার সুতিপাড়া ইউনিয়নের বেলীশ্বর গ্রামে পুজা আয়োজনকারী শ্রী শ্রী ব্রজ বল্লব শ্যাম সুন্দর জিউ বিগ্রহ মন্দিরের সভাপতি রতন কুমার পৈত চৌধুরী জানান, দিন এগিয়ে আসছে ক্রমশই। আর মাত্র কদিন বাকি পুজোর। এ বছরের পুজো কেমন হবে, তার ধারণা এখনও মানুষের মনে স্পষ্ট নয়। তবু পুজো জাঁকজমক করে হোক বা নাই হোক, মা তো সময় মেনেই আসবেন। তিথি মেনেই হবে তাঁর আগমন ও গমন।
তারা আরো জানান, সপ্তমীর দিন দেবীর আগমন ঘটে, আর দশমীর দিন দেবীর বিসর্জন বা বিদায়। দেবীর যাতায়াতের জন্য রয়েছে বিশেষ কিছু যান। কখনও মা আসেন গজে, কখনও ঘোটকে বা ঘোড়ায়, কখনও বা দোলায়, কখনও নৌকায়…আবার বিদায় নেওয়ার জন্যও একই যান গুলি রয়েছে। এর মধ্যে গজে আগমন সবচেয়ে শুভ। সুজলা, সুফলা হয় ধরণী, সুখে-সমৃদ্ধিতে ভরে ওঠে পৃথিবী। নৌকায় আসা মানেই বন্যা। তবে ভাল ফসলের ইঙ্গিতও দেয়।
শাস্ত্র মতে, মা এ বার আসছেন দোলায়। দোলা হল মড়কের প্রতীক। মহামারীর চিহ্ন। আবার ফিরছেন নৌকায়। নৌকা হল বন্যা র প্রতীক। যদি মা দুর্গার কোনও বছর একই বাহনে আগমন আর গমন ঘটে তবে আগামী বছরটা খুবই খারাপ বলে মনে করা হয়। গত বছর দেবীর আগমন আর গমন দুটোই ঘোড়ায় ঘটেছিল। আর তারপর এ বছর করোনা মহামারী।
প্রতিমা শিল্পী সঞ্চয় পাল বলেন, প্রতিবছর রথের পরপরই দুর্গা গড়ার কাজ শুরু হয়। এ বছর পূর্ণিমার কারণে পূজা দেরিতে হচ্ছে। প্রতিমাও তাই দেরিতে তৈরি হচ্ছে।
আরেক প্রতিমা শিল্পী রাহুল পাল বলেন, ‘মায়ের কাজ করতে ভালো লাগে। মায়ের রূপ অন্তরে নিয়ে কাজ করি। মা দুর্গার জন্য ভোর থেকে মাঝরাত অবধি কাজ করেও ক্লান্তি আসে না।’
তিনি জানান, দুর্গাপূজার জন্য একটা পুরো সেট প্রতিমা বানাতে ৫ থেকে ৬ শিল্পীর অন্তত ১৫ দিনের মতো সময় লাগে। অন্যান্য বছর ৮ থেকে ১০টা প্রতিমা তৈরির অর্ডার পেলেও এবার কমে গেছে। এ বছর তিনি পেয়েছেন মাত্র পাঁচটি প্রতিমা তৈরির কাজ।