ইসরাইলের সম্পূর্ণ অবরোধের মধ্যে আছে গাজা উপত্যকা। বিদ্যুৎ, জ্বালানি, খাবার এমনকি প্রয়োজনীয় পানি থেকে পর্যন্ত তারা বঞ্চিত। হাসপাতালগুলোতেও আহতদের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রী অথবা ওষুধ নেই।
জাতিসংঘের সংস্থাগুলো বলছে, গাজার বর্তমান মানবিক পরিস্থিতি ‘বিপর্যয়কর’ হয়ে উঠেছে। দক্ষিণ গাজার খান ইউনুসের আহমেদ আবদেলাজিজ স্কুলে ফিলিস্তিন শরণার্থীদের জন্য ইউএন রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি (ইউএনআরডব্লিউএ) পরিচালিত একটি আশ্রয়কেন্দ্রে থাকছেন কিফাহ কুদেহ।
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতি দুই থেকে তিন দিনে শুধুমাত্র তিন টুকরো খালি রুটি আর চার বোতল পানি দেওয়া হয়।’ এক টুকরো রুটিকে অর্ধেক করে ভাগ করে খান তারা।
কিফাহ কুদেহ আরও বলেন, ‘রুটির সঙ্গে যদি কখনো কিছু জ্যাম অথবা অন্য কিছু দেওয়া হয় তাহলে আমরা তা নিজেরা না খেয়ে বাচ্চাদের জন্য রেখে দিই।’ সারা দিনে মাত্র একটি রুটি টিকে থাকার জন্য যথেষ্ট নয় বলে জানান তিনি। আলজাজিরা।
২০০৭ সাল থেকে ইসরাইলের স্থল, সমুদ্র ও বিমান অবরোধের মধ্যে আছে গাজা। ইসরাইলের গত ৭ অক্টোবরের সর্বশেষ বোমা হামলা আর অবরোধের আগেও গাজার ৬০ শতাংশেরও বেশি বাসিন্দার খাদ্য সহায়তার প্রয়োজন ছিল।
গাজায় বর্তমান খাদ্য ঘাটতি পরিস্থিতি
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) আর খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) যৌথ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার সমগ্র জনসংখ্যা এখন খাদ্য সংকটের সম্মুখীন। ত্রাণ বহনকারী ১০০টি ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমোদনের জন্য মিসরে অপেক্ষা করছে। কিন্তু মিসর থেকে মাত্র তিনটি লরি পার হওয়ার অনুমতি দিয়েছে ইসরাইল। বেকারিগুলোতেও হামলা চালিয়েছে দেশটি।
গাজায় বর্তমানে অনির্দিষ্টকালের জন্য চলছে খাদ্যের সীমিত সরবরাহ। যেসব খাবারের দোকান ধ্বংস হয়েছে সেগুলো পুনরুদ্ধার করারও কোনো সুযোগ নেই। অনেকে কোনো রকম অর্থ ছাড়াই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। তাই এখন যেটুকু সীমিত খাদ্য পাওয়া যায় সেগুলো কেনারও কোনো সুযোগ তাদের নেই।
তবে ইসরাইলের ১৬ বছরের অবরোধের অধীনে এর আগেও গাজায় খাদ্য সরবরাহ সীমিতই ছিল। বেশির ভাগই ছিল টিনজাত পনির, আলুর চিপস আর ইন্সট্যান্ট নুডলসের মতো প্রক্রিয়াজাত খাবার।
ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত ফিলিস্তিনি সাইকোথেরাপিস্ট ইমান ফারাজাল্লাহ বলেন, ‘অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবার বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যার মূল কারণ।’
যুক্তরাজ্যভিত্তিক পুষ্টিবিদ ইউসরা এশাক বলেন, ‘গাজার ফিলিস্তিনিরা বছরের পর বছর ধরে অপুষ্টিতে ভুগছিল।’
ইসরাইলের ১৬ বছরের অবরোধে গাজার ওপর প্রভাব
ইমান ফারাজাল্লাহ ১৯৯০-এর দশকে বেড়ে উঠেছেন গাজায়। তিনি বলেন, ইসরাইলের অবরোধের অধীনে গাজায় মাংস একটি বিরল জিনিস হয়ে উঠেছিল। তাই তারা প্রক্রিয়াজাত খাবারের সঙ্গেই কিছুটা মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করত।
গাজায় বর্তমান পানি পরিস্থিতি
গাজায় বর্তমানে পানির পরিমাণ মোট জনসংখ্যার চাহিদার তুলনায় খুবই সীমিত। বেশির ভাগই দূষিত আর স্বাদে নোনতা। জাতিসংঘ তথ্যানুযায়ী, গাজার ৯৭ শতাংশ পানিই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মান পূরণ করে না। ফিলিস্তিনিরা তাদের খাবার পানির জন্য ব্যক্তিগত পানির ট্যাংক আর ছোট ডিস্যালিনেশন প্ল্যান্টের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে। বিদ্যুতের অভাবে সেগুলোও এখন বন্ধ।
পানি ছাড়া যত দিন বেঁচে থাকা সম্ভব
জেরুজালেমের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) একজন পুষ্টি বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি পানি ছাড়া সর্বোচ্চ ১০ দিন আর একজন শিশু সর্বোচ্চ পাঁচ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। আর একজন কর্মক্ষম ব্যক্তির দিনে প্রায় আড়াই থেকে তিন লিটার পানির প্রয়োজন।এক রুটি দুভাগ করে খাচ্ছে গাজা
ইসরাইলের সম্পূর্ণ অবরোধের মধ্যে আছে গাজা উপত্যকা। বিদ্যুৎ, জ্বালানি, খাবার এমনকি প্রয়োজনীয় পানি থেকে পর্যন্ত তারা বঞ্চিত। হাসপাতালগুলোতেও আহতদের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রী অথবা ওষুধ নেই।
জাতিসংঘের সংস্থাগুলো বলছে, গাজার বর্তমান মানবিক পরিস্থিতি ‘বিপর্যয়কর’ হয়ে উঠেছে। দক্ষিণ গাজার খান ইউনুসের আহমেদ আবদেলাজিজ স্কুলে ফিলিস্তিন শরণার্থীদের জন্য ইউএন রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি (ইউএনআরডব্লিউএ) পরিচালিত একটি আশ্রয়কেন্দ্রে থাকছেন কিফাহ কুদেহ।
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতি দুই থেকে তিন দিনে শুধুমাত্র তিন টুকরো খালি রুটি আর চার বোতল পানি দেওয়া হয়।’ এক টুকরো রুটিকে অর্ধেক করে ভাগ করে খান তারা।
কিফাহ কুদেহ আরও বলেন, ‘রুটির সঙ্গে যদি কখনো কিছু জ্যাম অথবা অন্য কিছু দেওয়া হয় তাহলে আমরা তা নিজেরা না খেয়ে বাচ্চাদের জন্য রেখে দিই।’ সারা দিনে মাত্র একটি রুটি টিকে থাকার জন্য যথেষ্ট নয় বলে জানান তিনি। আলজাজিরা।
২০০৭ সাল থেকে ইসরাইলের স্থল, সমুদ্র ও বিমান অবরোধের মধ্যে আছে গাজা। ইসরাইলের গত ৭ অক্টোবরের সর্বশেষ বোমা হামলা আর অবরোধের আগেও গাজার ৬০ শতাংশেরও বেশি বাসিন্দার খাদ্য সহায়তার প্রয়োজন ছিল।