৭০০ শিশু-কিশোরের স্বপ্নের মেট্রোরেল ভ্রমণ

আলোকিত স্বদেশ প্রতিবেদক:

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে প্রায় ৭০০ শিশু-কিশোর মেট্রোরেল ভ্রমণ করেছে।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) শিশুরা মেট্রোরেল ভ্রমণ করে। ভ্রমণের সময় শিশুদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ছিল। সবার চোখে-মুখে ছিল আনন্দ, নতুন অভিজ্ঞতা অর্জনে বিস্ময়ের ছাপ।

এই শিশু-কিশোরদের মধ্যে ছিল জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতার বিজয়ী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিশু বিকাশ কেন্দ্রের শিশু এবং পথশিশুরা।

সোমবার সাড়ে ১১টার পর বিভিন্ন জায়গা থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলো আগারগাঁও মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে এসে দাঁড়ায়। পরে লাইন ধরে শিশুরা প্ল্যাটফর্মে ঢোকে। প্ল্যাটফর্ম থেকে মেট্রোরেলে ওঠার জন্য তাদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় ভ্রমণের টিকিট। টিকিট পাঞ্চ করতে সহায়তা করেন স্কাউট সদস্যরা। সবাই যে যার টিকিট হাতে নিয়ে পাঞ্চ করে ভেতরে ঢোকে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত পথশিশু ও পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে ১৩৫ জন, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি থেকে ৪৭৪ জন, আজিমপুর ও কেরানীগঞ্জের শিশু বিকাশ কেন্দ্র থেকে ২০০ জন শিশু-কিশোর এই মেট্রোরেলে ভ্রমণের সুযোগ পায়। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বরত কর্মকর্তারা নির্ধারিত সময়ে বাসে করে তাদের আগারগাঁও স্টেশনে নিয়ে আসে।

মেট্রোরেল চলাচলের নির্ধারিত সময়ের পর দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশন থেকে শিশুদের নিয়ে নির্ধারিত ট্রেনটি ১২ মিনিটে উত্তরা স্টেশনে পৌঁছায়। যাত্রাপথে ট্রেনের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯৪ কিলোমিটার। স্টেশন থেকে নেমে নির্ধারিত জায়গায় টিকিট রেখে বের হয়ে আবার ঢোকার লাইনে দাঁড়ায় শিশুরা।

আবারও তাদের হাতে টিকিটি তুলে দেওয়া হয়। সেই টিকিট পাঞ্চ করে তারা আবার প্ল্যাটফর্মে ঢোকে। দুপুর ১টা ৩৬ মিনিটে শিশু-কিশোর ও অভিভাবকসহ অন্যদের নিয়ে ট্রেনটি ১৩ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশনে এসে পৌঁছায়।

এ সময় ট্রেনের গতি ছিল ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার। যাওয়া-আসার প্রতিটি মুহূর্ত গান গেয়ে উদযাপন করে শিশুরা। এছাড়া নিজেদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে মেট্রোরেলে ভ্রমণের স্মৃতি ধরে রাখে ছবি তুলে।

যাত্রাপথে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র কাওরান বাজারের শিশু জিসান বলে, আমার খুব ভালো লাগছে।

কাওরান বাজার পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রের শিশু আরিফুলের ভাষ্য, টেলিভিশনে মেট্রোরেল দেখেছি। আজ উঠতে পেরে ভালো লাগছে।

বাংলাদেশ শিশু একাডেমির রংপুর বিভাগ থেকে আসা শিশু নাসরিন আক্তার ময়না বলেন, আমার আশা পূরণ হয়েছে।

বাংলাদেশ শিশু একাডেমির ময়মনসিংহ বিভাগের শেরপুর থেকে আসা লিপি বলেন, আমি আমার ভাইকে সঙ্গে নিয়ে এসেছি। অনেক ভালো লাগছে।

বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকি ইনাম বলেন, এখানে অনেক শিশু রয়েছে, যারা এখন পর্যন্ত মেট্রোরেল দেখেনি। তারা আজ মেট্রোরেল দেখার সুযোগ পেয়েছে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. রেজাউল কবির বলেন, আজ যে শিশুদের মেট্রোরেলে ভ্রমণ করানো হয়েছে তাদের মধ্যে তিন ধরনের শিশু রয়েছে। জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতার বিজয়ী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিশু বিকাশ কেন্দ্রের শিশু এবং পথশিশুরা। তারা আজ মেট্রোরেলকে জানছে, বাংলাদেশকে জানছে। আমাদের আজকের এই কর্মসূচির মাধ্যমে শিশুরা এসব বিষয়ে জানার সুযোগ পাচ্ছে।

ঢাকা ম্যাস রেপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট লাইন ১-এর উপ-প্রকল্প পরিচালক (গণসংযোগ) নাজমুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ছাড়া আরও যারা শিশু-কিশোরদের ভ্রমণ করানোর উদ্যোগ নিয়েছেন, তাদের ধন্যবাদ জানাই। এ বিষয়টি আমি ইতিবাচক হিসেবে দেখছি।