তোফায়েল হোসেন জাকির, গাইবান্ধাঃ চলতি বোরো মৌসুমে গাইবান্ধার কৃষকরা ধানচারা রোপনে প্রস্ততি নিয়েছে। ইতোমধ্যে ৬ হাজার ২২৫ হেক্টর জমিতে করা হয়েছে বীজতলা। আর একসপ্তাহের মধ্যে এসব বীজতলার চারা তুলে কাঁদা মাটিতে রোপন করা হবে জমিতে।
এর মধ্যে শৈত্যপ্রবাহ এবং ঘন কুয়াশার কারণে বোরো ধানের চারা ঠান্ডার আঘাত থেকে রক্ষা করার জন্য গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। ওই লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ১০০ একর জমিতে সমলয় পদ্ধতিতেও চারা রোপন করা হবে।
কার্যালয় সূত্র জানায়, অধিদপ্তর চলতি বছর মোট ১ লাখ ২৯ হাজার হেক্টর জমি বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ ৬০ হাজার ৪১৮ মেট্রিক টন পরিচ্ছন্ন ধান। জমিকে বোরো চাষের আওতায় আনতে প্রায় ৬ হাজার ২২৫ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। যেখানে চারা ভালোভাবে বেড়ে উঠেছে। কিন্তু, গত কয়েকদিন ধরে ঘন কুয়াশার সাথে চলমান শৈত্যপ্রবাহ বীজতলার চারাকে প্রভাবিত করছে এবং বোরো চাষ নিয়ে কৃষকদের আরও চিন্তিত করে তুলছে। ঠাণ্ডাজনিত আঘাত থেকে বোরোর চারা রক্ষা করতে জেলার সাতটি উপজেলায় কৃষকদের কিছু পরামর্শ সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করছে বিভাগ। এছাড়াও, মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের বীজতলাতে বোরোর চারা ভালো রাখার জন্য তাদের করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দিচ্ছেন বলে জানিয়েছে জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ রেজাউল ইসলাম।
জানা জায়, গাইবান্ধার অধিকাংশ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভশীল। এ জেলার শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ জনসাধারণ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষি ফসল ঘরে তুলে তাদের মৌলিক চাহিদা পুরণে চেষ্টা করে। এখানে ধান-পাট-ভূট্রা ও সবজিসহ বিভিন্ন ধরণের ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে। এসবের মধ্যে সবচেয়ে লাভজনক ফসল হচ্ছে বোরো ধান। তাই এবছর সাধারণ চাষাবাদের পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে সমলয় পদ্ধিতে বোরো ধানচাষাবাদের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে সরকারি কৃষি প্রণোদনা কার্যক্রমের আওতায় কৃষকরা নতুন মাত্রায় ট্রে-তে চারা উৎপাদন শুরু করছেন।
সুন্দরগঞ্জের কৃষক শাহ আলম মিয়া জানান, এ বছর ৪ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করবেন। ইতোমধ্যে চারা উৎপাদন শেষের দিকে। এখন জমি প্রস্ততি কাজ চলছে।
পলাশবাড়ীর আব্দুর রহমান বলেন, বোরো ধান চাষাবাদে আগে কখনো ট্রে-তে ধানচারা উৎপাদন করা হয়নি। এ বছর সমলয় চাষের লক্ষ্যে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ট্রে-তে চারা উৎপাদন করা হচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়তো ভালো চারা ও অধিক ফলন নেয়া যেতে পারে।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক বেলাল উদ্দিন বলেন, গাইবান্ধা জেলা কৃষি উপপরিচালক বেলাল উদ্দিন জানান, কৃষকদের লাভবান করতে তাদের প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এখন বীজতলগুলো সূর্য্যের আলো পাচ্ছে বলে ঠান্ডার আঘাতে চারা নষ্ট হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।