বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম আরো কমলে দেশেও তেলের দাম সমন্বয় করা হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
তিনি বলেছেন, আমরা তেলের দাম বাড়াইনি বরং সমন্বয় করেছি। আরো সমন্বয় করতে হতে পারে। আন্তর্জাতিক বাজারে যদি তেলের দাম আরেকটু কমে, তবে আমরাও আরেকটু কমিয়ে সমন্বয় করবো।
রোববার বিদ্যুৎ ভবনের বিজয় হলে ‘বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা: অস্থির বিশ্ববাজার’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ (এফইআরবি) এ সেমিনারের আয়োজন করে।
এ সময় প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, আমরা আশাবাদী তেলের দাম কমলে আমরাও সমন্বয় করে নিচে নিয়ে আসতে পারবো। আমরা আশাবাদী আগামী মাসে লোডশেডিংও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবো।
নসরুল হামিদ বলেন, ‘আমরা কঠিনভাবে বিশ্ব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। মূল্য সমন্বয় কিন্তু খুব বেশিদিন হয়নি। আমি সবাইকে বলব এক-দুইটা মাস আপনারা অন্তত ধৈর্য ধরুন। আপনারা ধৈর্য ধরুন, একটু সহনীয় হউন।
তিনি বলেন, ‘বারবার বলে আসছি, এ সংকট সাময়িক। আমরা যে পরিমাণ গ্যাস আমদানি করি, তা খুবই সামান্য। কিন্তু দাম বেড়ে গেছে অতিরিক্ত। তাহলে আমরা কি এখন পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ করে দেবো? বিশ্বের সব দেশই যে খুব ভালো আছে, তা নয়। অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা মোটামুটি ভালো আছি। চার-পাঁচ মাস আগে তো ভালোই ছিলাম। আমরা কি তখন ক্রাইসিসে পড়েছিলাম? আমরা কি জানতাম যে, ৫ ডলারের গ্যাস ৪৭ ডলার হয়ে যাবে।’
বিশেষজ্ঞদের উদ্দেশে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক বিশেষজ্ঞ আছেন, হুটহাট কথা বলেন। এখন চ্যালেঞ্জের সময় আসছে। এখন দীর্ঘমেয়াদি বিষয় নিয়ে কথা বলার সময় নয়। এখন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সময়। এখন কী করতে হবে, সেটা নিয়ে কথা বলেন।’
গ্যাস উত্তোলন প্রসঙ্গে নসরুল হামিদ বলেন, ‘জ্বালানি বিভাগে বিশিষ্ট ভূ-তত্ত্ববিদরা কাজ করছেন। তারা কেউ বলছেন গ্যাস নেই, কেউ বলছেন আছে। বিশেষজ্ঞদের কথায়ই তো আমরা সিদ্ধান্ত নিই। গভীর সমুদ্রে তিনটি কোম্পানিকে কাজ দিয়েছি। মিয়ানমারে যারা কাজ করেছেন, তাদেরও কাজ দিয়েছি। যেসব কোম্পানি আছে, তারা যদি গ্যাস উত্তোলনে নিজেদের লাভ দেখেন, তবেই তারা উত্তোলন করবেন। তারপর আমাদের কাছে বিক্রি করবেন। তারা যদি বলেন উত্তোলন করে লাভ নেই। তাহলে আমাদের কী করার আছে? সরকার কেন চাইবে না গ্যাস উত্তোলন করতে, অবশ্যই চাইবে।’
সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মাহবুব হোসেন। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বদরুল ইমাম, ক্যাবের জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম ও পেট্রোবাংলা, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডসহ জ্বালানি বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।