রাজধানীতে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বেপরোয়া বাস ড্রাইভার

ছবি সংগৃহীত

আলোকিত স্বদেশ রিপোর্টঃ নিয়ম উপেক্ষা করে বাস মালিকরা চুক্তিতে চালকদের হাতে তুলে দিচ্ছেন বাস।আর রুটের খরচ ও চালক-হেলপারদের মজুরি তো আছেই। এসব ওঠাতে গিয়েই বেপরোয়া হয়ে উঠছেন চালক ও হেলপাররা। বেশি ট্রিপের সঙ্গে সিরিয়াল ধরতেও তারা মরিয়া থাকেন। যার কারণে ব্যস্ত সড়কে বেড়েছে পাল্লা দেওয়ার প্রবণতা। আর বাসগুলোর পাল্লা পাল্লির কারণে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে মোটরসাইকেল, রিকশা ও পথচারীরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মালিকদের বেঁধে দেওয়া কিছু নিয়মের কারণেই কমছে না সড়কে দুর্ঘটনা। রাজধানীতে একজন মালিক তাদের গাড়ি দিনে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকার বিনিময়ে তুলে দিচ্ছেন চালকের হাতে। দিনে একটি গাড়ির পেছনে খরচও আছে প্রায় দেড় হাজার টাকা। এর পর যা থাকে সেটাই চালক ও হেলপারের পকেটে যায়। যে কারণে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানো, যত্রতত্র যাত্রী ওঠানো ও একই লাইনের অন্য বাসের আগে সিরিয়াল ধরতে মরিয়া থাকেন চালকরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুর্ঘটনার পর বেরিয়ে আসে চালকের লাইসেন্স ছিল না বা গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট ছিল না। এর আগ পর্যন্ত এইসব কেউ খতিয়ে দেখেনা। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মে মাসে রাজধানীতে ২৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬ জন মারা গেছেন। ঢাকা বিভাগে ১২৬টি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ১৫৯ জন। সারাদেশে ৫২৮টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৬৪১ জন। আহত হয়েছেন ১৩৬৪ জন। এর মধ্যে নারী ৮৪ জন শিশু ৪৭ জন।

এপ্রিলের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, রাজধানীতে ২২টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন মারা গেছেন। সারাদেশে ৪২৭ দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৫৪৩ জন। আহত হন ৬১২ জন।মার্চের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ঢাকার সড়কে ১৯টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২১ জন। সারাদেশে ৪৫৮টি দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ছিল ৫৮৯, আহত ৬৪৭ জন।জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২১টি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ২৭ জন। সারাদেশে ৮৪৮টি দুর্ঘটনায় নিহত ১০১২ জন।

রাজধানীতে যেসব গণপরিবহন চলছে সেসব গাড়ির ফিটনেস থাকে না বা লাইসেন্সবিহীন চালককে চালাতে দেখা যায়। এসব গাড়ির মালিক ও চালকরা একটি গোষ্ঠীকে ম্যানেজ করে পরিবহন পরিচালনা করছে। এ কারণেও বাড়ছে দুর্ঘটনার হার।

সর্বোপরি এ বেপারে সকলের দাবি,চুক্তিতে গাড়ি চালানো বন্ধ করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার ইতিমধ্যে চুক্তিভিত্তিক গাড়ি চালানো বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। চালক ও হেলপারদের নিয়োগপত্র দিতে হবে।কিন্তু,মালিকপক্ষ এখনও এ বিষয়ে উদাসীন কারণ নিয়োগপত্র দিলে শ্রম আইনের অনেক বিষয় চলে আসে তাই। যা মালিকপক্ষ মানতে নারাজ। শ্রমিকরাও তাই বাধ্য হয়ে চুক্তিতে চালাতে বাধ্য হচ্ছেন। কিন্তু মালিকরা তাদের এসব নিয়ম বদলালে চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকবে না, টেনশনও কাজ করবে না।আর দুর্ঘটনাও ঘটবে কম।