অবরুদ্ধ শহর গাজার মাটির নিচে যেন আরেক জগত

গাজা

রূপকথার কোনো কাল্পনিক নগরী যেন হামাসের সুড়ঙ্গ। ওপরে যতটা, নিচেও যেন ঠিক ততোটাই। পুরো গাজার নিচে মাকড়শার জালের মতো ছড়িয়ে আছে হামাসের এই সুড়ঙ্গ, যা ইসরাইলি বাহিনীর জন্য এক মূর্তিমান আতঙ্ক।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত কারাগার হিসেবে পরিচিত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার একপাশে ইসরাইলের সীমান্ত, অন্য পাশে মিশর আর ভূমধ্যসাগর। তাই বহির্বিশ্বের সঙ্গে গাজার যোগাযোগের জন্য বলা যায় একমাত্র পথ এই টানেলগুলো।

২০০৭ সালে হামাস প্রথম সুড়ঙ্গটি নির্মাণ করে গাজা উপত্যকা ও মিশরের মাঝামাঝি অংশে। মূলত ইসরাইলের অবরোধ এড়িয়ে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের জন্য ভোগ্যপণ্য সরবরাহ সুড়ঙ্গটি নির্মাণের মূল লক্ষ্য ছিল। এ ধারণাকে কাজে লাগিয়ে ২০১৩ সালে ইসরাইলমুখী সুড়ঙ্গ তৈরি শুরু করে হামাস। সেই সময় ইসরাইল-গাজা সীমান্তে কমপক্ষে তিনটি সুড়ঙ্গ নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে দুটি সুড়ঙ্গ বিস্ফোরকে বোঝাই ছিল।

ইসরাইল ও মিসর নিয়মিত এই সুড়ঙ্গপথ ধ্বংসের চেষ্টা চালালেও এখনো এর বেশিরভাগ অংশ অক্ষত রয়েছে বলে জানান একজন ওয়াশিংটনভিত্তিক বিশ্লেষক।

সিএসআইএসের বিশ্লেষক ড্যানিয়েল বাইম্যান বলেন, ‘হামাস ইরান থেকে সুড়ঙ্গপথে গাজায় অস্ত্র নিয়ে আসে। এর মধ্যে দূরপাল্লার অস্ত্রও থাকে।’

বিশ্লেষক চার্লস লিসটার বলেছেন, ‘ইরান হামাসকে সমুদ্রপথে আরও আধুনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পাঠায়। এ ছাড়া গাজায় অস্ত্র উৎপাদনের জন্য উপকরণও পাঠায় তারা।’

হামাসসহ গাজার সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো বিভিন্ন সময়ে সুড়ঙ্গে তাদের সংগৃহীত ক্ষেপণাস্ত্র, রকেট, গোলাবারুদ লুকিয়ে রাখে। যোদ্ধাদের গোপন আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহৃত হয় সেগুলো। এমনকি সমরাস্ত্র তৈরির কারখানাও রয়েছে এসব টানেলে।

বলা হচ্ছে, ইসরায়েলে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে এসব টানেল। এমনকি আটক ইসরায়েলিদের বন্দি করে রাখা হয়েছে এখানেই।