একদিবসী ক্রিকেটে বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার তিনি, মাঠের ভেতরে-বাইরে তার বিপরীতমুখী আচরণ। খেলার পাতার খবরের জুতসই উপাদান সাকিব।
দ্রুত টপঅর্ডার সাজঘরে ফিরলে আশা সাকিব, প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের লম্বা জুটি, হাত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে ম্যাচ-ভরসা তিনি। কখনো মিডউইকেট থেকে স্টাম্প বরাবর থ্রো পালটে দেয় ম্যাচের চিত্রনাট্য।
টিম কম্বিনেশন ঠিক করতে ক্যাপ্টেন, ধারাভাষ্য কক্ষে আতাহার আলী খান ও শামিম চৌধুরীর আপ্লুত স্বর আর গ্যালারিতে উদ্যাপনের উপলক্ষ্যে দর্শক নিঃশঙ্কোচে যাকে স্মরণ করেন-তিনি সাকিব।
দলের প্রয়োজনে যেন আলাদিনের চেরাগ। যখনই দরকার, তিনি আছেন। এশিয়া কাপে ভারত এবং বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে পারফরম্যান্স তারই প্রমাণ।
বিতর্ক তৈরিতেও কম যান না। হুটহাট বাণিজ্যিক কাজে অংশ নেওয়া, দর্শক পেটানো, বাজে অঙ্গভঙ্গিসহ আরও কত কী! তবে প্রত্যেকবার ফিরে এসেছেন চমৎকার পারফরম্যান্স দিয়ে। পারফরম্যান্স আর বিতর্কে তিনি টক-ঝাল-মিষ্টি চাটনির দারুণ এক কম্বো প্যাকেজ। খবরের হেডলাইন তাকে হতেই হবে। যেন ‘খবরের পাতাজুড়ে যা লেখ ভাই, একটা শিরোনাম আমার থাকা চাই’।
বিশ্বকাপের আগে তামিম ইকবালের দলে না থাকা এবং এক সাক্ষাৎকার দিয়ে সমালোচিত হয়েছেন সাকিব। পরে অনুশীলনে চোট পাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আনন্দ প্রকাশ করতে দেখা যায় অনেক ক্রিকেটভক্তকে।
বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের দুই ওপেনিং ব্যাটার বড় জুটি গড়ে বাংলাদেশকে ভয় দেখাচ্ছিল, তখনই বল হাতে সফল সাকিব। তুলে নিলেন ইব্রাহিম জাদরানের উইকেট। রহমত শাহকে ফিরিয়ে লাগাম টেনেছেন। পরে নাজিবুল্লাহ জাদরানের উইকেটও নেন।
তার চমৎকার নেতৃত্বগুণে আফগানিস্তান গুটিয়ে যায় ১৫৬ রানে। এক দর্শকের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘সাকিব, দ্য ওয়ান ম্যান আর্মি অব বাংলাদেশ ক্রিকেট’।
এশিয়া কাপ চলাকালে দুদিনের ছুটি পেয়ে দেশে ফিরলেন বাণিজ্যিক চুক্তির কাজ সারতে। ফিরেই ভারতের বিপক্ষে ম্যাচসেরা পারফরম্যান্স। ২০১৯ বিশ্বকাপের ফটোসেশন বিতর্ক শেষে ৬০০-এর বেশি রান, সঙ্গে ১০ উইকেটসহ আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গির পর পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৬ বলে ৪৪।
প্রতিটি বিতর্কের পর ক্রিকেটপ্রেমীরা সাকিবের ওপর অভিমান করেন। আবার পারফরম্যান্সের কারণেই বাধ্য হন ভালোবাসতে।