ডেস্ক রিপোর্টঃ কয়েকদিনের টানা ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে আকস্মিক ভয়াবহ বন্যায় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। চট্টগ্রাম নগরবাসী পাঁচ দিন ধরে পানিবন্দি। বান্দরবানে পাহাড় ধসে মা-মেয়ের মৃত্যু হয়েছে।
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ও কক্সবাজারের চকরিয়ায় বন্যার পানিতে তলিয়ে শিশুর মৃত্যু হয়েছে। চট্টগ্রামের রাউজানে তরুণ খামারি, কক্সবাজারের চকরিয়ায় শিশু ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে ম্রো সম্প্রদায়ের একজন নিখোঁজ রয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বান্দরবান, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ায়। বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
এছাড়া অতি বৃষ্টিপাতে রাঙামাটি, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় পাহাড় ধস হয়েছে। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে খাগড়াছড়ির সঙ্গে লংগদুর। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চন্দনাইশের হাশিমপুর এলাকা ও সাতকানিয়ার কেরানিহাটসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়কের ওপর দিয়ে কোমর সমান পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
সকাল থেকে আটকা পড়ে শত শত যানবাহন। মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সকাল থেকেই চট্টগ্রামের সঙ্গে কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ঘরবাড়িতে পানি ওঠায় হাজার হাজার মানুষ আশ্রয়হীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলায় বুধ ও বৃহস্পতিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
তিনি আরও বলেন, যদি কোনো জায়গায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোনো কারণে পরীক্ষা নেওয়ার মতো পরিস্থিতি না থাকে তবে শুধু ওই অঞ্চলের পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। এর আগে মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মহানগরীর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
এদিকে লক্ষ্মীপুর, পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী ও দুমকিতে তলিয়ে গেছে আমন-সবজি খেত। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে তিন শতাধিক চাতাল কলে চাল উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। বরিশালের বাবুগঞ্জের রহমতপুর-মীরগঞ্জ সড়ক ও বিমানবন্দর বিলীন হওয়ার পথে। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে ভেঙে গেছে কয়েকটি সড়ক। বাগেরহাটে ৭৫১০ মানুষ পানিবন্দি ও তলিয়ে গেছে ঘের। ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া ও ফেনীর মহুরি ও কহুয়া নদীর বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বগুড়ায় ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ২১৩ মিলিলিটার। বন্যার পানিতে প্লাবিত হয় সড়ক-মহাসড়ক থেকে অনেক এলাকার ঘরবাড়ি-রাস্তাঘাট, পুকুর, ফসলের মাঠ। নলকূপ ডুবে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।