জুনে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে ১৭ দশমিক ২ জন নিহত হয়েছেন। মে-তে দৈনিক গড় মৃত্যু ছিল ১৩.১৬ জন। এ হিসাবে আগের মাসের চেয়ে জুনে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু বেড়েছে ৩০.৬৯ শতাংশ। ওই মাসে দেশে ৫৫৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫১৬ জন নিহত ও ৮১২ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ৭৮ জন ও শিশু ১১৪ জন। বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো প্রতিবেদনে এ পরিসংখ্যান জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। যদিও জুনে ঈদুল আজহার কারণে যাত্রী চলাচল আগের মাসের চেয়ে অনেক বেশি ছিল।
দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসাবে সংগঠনটি যানবাহনের অতিরিক্ত গতিকে দায়ী করেছে। এতে বলা হয়েছে, বর্তমানে অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটছে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে। এই গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দুর্ঘটনা কমানো যাবে না। গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য মোটিভেশনাল প্রশিক্ষণ যেমন দরকার, তেমনি দরকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জন। যানবাহনে আধুনিক প্রযুক্তি সংযুক্ত করতে হবে, যার মাধ্যমে গতিসীমা নজরদারি ও রেকর্ড করা যায়।
এতে আরও বলা হয়, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপসহ পণ্যবাহী ভারী যানবাহন এবং মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বাড়ছে। ভারী যানবাহনের অধিকাংশ চালক শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ। তাদের চিকিৎসা ও প্রশিক্ষণ দরকার। মোটরসাইকেল চালকদের বিরাট অংশ কিশোর-যুবক। এরা বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালিয়ে নিজেরা দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে ও অন্যদের আক্রান্ত করছে। মোটরসাইকেল বেপরোয়া চালানোর সঙ্গে রাজনৈতিক সংস্কৃতির সম্পর্ক রয়েছে। এটা বন্ধ করতে হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জুনে সবচেয়ে বেশি ১৬৯ জন মারা যান মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়; যা মৃত্যুর ৩২.৭৫ শতাংশ। ট্রাক, পিকআপ, ট্রাক্টর ও ট্রলির ৬৫ জন এবং প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, অ্যাম্বুলেন্স ও জিপের আরোহী ২৪ জন মারা গেছেন। দুর্ঘটনার ধরন প্রসঙ্গে বলা হয়, ১০৯টি (১৯.৪৯ শতাংশ) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২৬৮টি (৪৭.৯৪%) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ও ৯৭টি (১৭.৩৫%) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেওয়া এবং ৭২টি (১২.৮৮%) যানবাহনের পেছনে আঘাত করার কারণে। এতে আরও বলা হয়, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। এ বিভাগে ১৬৮টি দুর্ঘটনায় ১০৯ জন নিহত হয়েছেন। বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে কম ২৪টি দুর্ঘটনায় ১৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।