মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ দেশে ভোজ্যতেলের মোট’চাহিদার সিংহভাগই আমদানিনির্ভর।এতে বছরে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা।আমদানিতে এগিয়ে সয়াবিন ও পাম অয়েল।দেশে উৎপাদিত তেলের মধ্যে শীর্ষে সরিষা এছাড়া সয়াবিন,সূর্যমুখীসহ দু-একটি অপ্রচলিত তেলবীজের চাষ হয় সামান্য। বোরো,আমন চাষের মাঝের সময়ে বড় অংশ জমি পতিত থাকে। এ পতিত জমি ব্যবহারসহ দেশে তেলবীজের উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানিনির্ভরতা অর্ধেকে আনতে তিন বছর মেয়াদি রোডম্যাপ বাস্তবায়ন করছে সরকার।
রোডম্যাপ বাস্তবায়নে এরই মধ্যে বেশ কিছু তেলজাতীয় ফসলের সঙ্গে সরিষার আবাদ ব্যাপকভাবে বাড়ানোর প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। মিলতে শুরু করেছে তার সুফলও।এ বছর সারাদেশে ব্যাপকভাবে বেড়েছে সরিষার চাষাবাদ।কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে,গত বছর সারাদেশে ছয় লাখ ১০৬ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছিল।উৎপাদন ছিল ৮ লাখ ২৪ হাজার টন।চলতি মৌসুমে সারাদেশে ৬ লাখ ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এ বছর আবাদ হয়েছে আট লাখ ১১ হাজার হেক্টর জমিতে।উৎপাদন সাড়ে ৯ লাখ টন ছাড়াতে পারে বলেও আশা করা হচ্ছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন,বৈশ্বিক বাজারে অস্থিরতার কারণে দেশে ভোজ্যতেলের বাজারও গত বছর থেকে বেশি অস্থিতিশীল।ভোক্তারা তেল কিনেছেন রেকর্ড দামে।সেটার একটি প্রভাব পড়েছে সরিষা চাষে।গত এক বছরের তুলনায় সরিষা বীজের দাম প্রতি মণে বেড়েছে প্রায় এক থেকে দেড় হাজার টাকা।সে কারণেও চাষিরা সরিষা চাষে আগ্রহী হয়েছেন।২০২৫ সাল নাগাদ সাড়ে ১৮ লাখ হেক্টর জমিতে তেলজাতীয় ফসল আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। এর মধ্যে সরিষার তেল উৎপাদনের পরিকল্পনা সাড়ে ২৬ লাক্ষ টন।
এ প্রকল্পের কার্যক্রম ২০২০ সালের জুলাইয়ে শুরু’ হয়ে দেশের ২৫০ উপেজলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২২২ কোটি ১৬ লাখ।টাকা।গত বছর তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়াতে ৫শ কোটি টাকা প্রণোদনা দেয় সরকার।তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে নেওয়া প্রকল্পের পরিচালক জসীম উদ্দিন বলেন,পাঁচটি তেলজাতীয় ফসল সরিষা,সূর্যমুখী,সয়াবিন, চিনাবাদাম ও তিলের উৎপাদন বাড়াতে কাজ চলছে।এ বছর ১০ লাখ বিঘা জমিতে সরিষা,৭০ হাজার বিঘা জমিতে সূর্যমুখী, ২৬ হাজার বিঘা জমিতে চিনাবাদাম এবং ২৪ হাজার বিঘা জমিতে সয়াবিন চাষে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।শুধু প্রকল্প নয়,উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন(বিএডিসি), বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি),বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটও(বিনা)কাজ করছে।