মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ মুন্সীগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট করতে আসা লোকজন প্রতিদিনই নানা হয়রানি ও হেনস্তার শিকার হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি বাইরে থেকে বহিরাগত লোকজন ডেকে নিয়ে গ্রাহকদের হুমকি-ধামকি দেয়ারও অভিযোগ আছে।এমন অভিযোগ মুন্সীগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য মো:আসাদুজ্জামান সুমনেরও। তিনি হয়রানি ও হেনস্তার শিকার হওয়ায় এর প্রতিকার চেয়ে পাসপোর্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বুধবার মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। এই অভিযোগের অনুলিপি মুন্সীগঞ্জের ৩ জন সংসদ সদস্য, পুলিশ সুপার,মুন্সীগঞ্জ গোয়েন্দা সংস্থার উপ পরিচালক এবং মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাব বরাবর দিয়েছেন।
এরআগে গত ২৪ জানুয়ারি দুপুরে মুন্সীগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে যুবলীগ নেতা মো:আসাদুজ্জামান সুমন এই হয়রানি ও হেনস্তার শিকার হন বলে জানান।লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়,পাসপোর্টের আবেদনপত্র এবং পাসপোর্টের নবায়নের অনলাইনে টাকা জমা দেয়ার পর মঙ্গলবার দুপুর ২ টার দিকে পাসপোর্ট অফিসে যায় আশাদুজ্জামান সুমন।এ সময় পাসপোর্ট অফিসের গেইটে এক আনসার সদস্য আশাদুজ্জামান সুমন ও তার সাথে থাকা সম্রাট দেওয়ানকে বাঁধা দেয়।এ সময় আনসার সদস্য আশাদুজ্জামান সুমনকে জানায় দুপুর ১ টার পর কাউকে অফিসে ঢুকতে দেয়া হয়না। আনসার সদস্যকে ম্যানেজ করে পাসপোর্ট অফিসের ভেতরে গিয়ে পাসপোর্ট কর্মকর্তার রুম তালাবদ্ধ দেখে অফিসের সহকারী হিসার রক্ষক মো:উজ্জল সিকদার সজীবের কাছে পাসপোর্ট অফিসের উপ পরিচালকের মোবাইল নম্বর চায়।নাম্বার দিতে অস্বীকৃতি জানায় সজীব।এরপরও আবার মোবাইল নাম্বার চাইলে সজীব আশাদুজ্জামান সুমনের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং পাসপোর্টসহ পাসপোর্ট নবায়নের কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়। এক পর্যায়ে সজীব আশাদুজ্জামান সুমনের গায়ে ধাক্কা দিয়ে বসতে বলে এবং বলে বাইরে থেকে মাস্তান আসছে শায়েস্তা করার জন্য। এ সময় মোবাইল করে সজীব মাস্তান ডাকে। এরইমধ্যে অফিসের এক কর্মচারি বলে পাসপোর্ট অফিসের উপ- পরিচালক অফিসে এসেছেন। ওই কর্মচারি বলে উপ-পরিচালক আপনাকে ডাকে। সুমনকে ডেকে নিয়ে উপ-পরিচালকের পাশের একটি কক্ষে বসায়।এমন সময় শহর ছাত্রলীগের সভাপতি নছিবুল ইসলাম নোবেল ও নোবেলের সাথে থাকা ১০-১২ জন বহিরাগত পাসপোর্ট কর্মকর্তার রুমে ঢুকে।এরপর পাসপোর্ট কর্মকর্তা উম্মে শাকিলা তানিয়া,সহকারী হিসাব রক্ষক মো:উজ্জ্বল সিকদার সজীব,অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মো:শাহজালাল মিটিং করে।কিছুক্ষণ পর পাসপোর্ট কর্মকর্তার রুম থেকে বের হয়ে নছিবুল ইসলাম নোবেল আমাকে বলে কী হয়েছে?আমি তাকে ঘটনা বলি।এরপর অপেক্ষায় থাকার পর সুমন নিজ থেকেই পাসপোর্ট কর্মকর্তার রুমে প্রবেশ করে সালাম দেয়।পাসপোর্ট কর্মকর্তা সুমনের কোন কথা শুনতে না চেয়ে আগামীকাল আসতে বলে। সুমন চলে আসার সময় পাসপোর্ট কর্মকর্তা তানিয়া তাকে দাঁড়াতে বলে সুমনকে বলে আপনি আমার স্টাফদের সাথে খারাপ ব্যবহার কেনো করেছেন?এরপর সুমন চলে আসেন।
রাস্তায় আসার পর ছাত্রলীগ নেতা নোবেল সুমনকে বলে পাসপোর্ট অফিসের সজীব ছেলেটা অনেক ক্ষমতাশালী,ওর হাত অনেক লম্বা,আড়াইহাজার থানায় সজীবের বাড়ী। একটা আন্ডার টেকেন দিয়ে ওর সাথে মিল করে ফেলেন,নতুবা সমস্যা হবে।
মুন্সীগঞ্জ শহর ছাত্রলীগের সভাপতি নছিবুল ইসলাম নোবেল বলেন,আমি আমার এক আত্মীয়ের পাসপোর্ট করতে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি সুমন ভাইয়ের সাথে পাসপোর্ট অফিসের স্টাফদের ঝগড়া, কথা-কাটাকাটি।
মুন্সীগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক উম্মে শাকিলা তানিয়া বলেন,এ অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।উল্টো আমার অফিসের স্টাফদের সাথে খারাপ আচরণ করেছে এবং আমার রুমে এসে আমার সাথেও খারাপ আচরণ করে।এটা ছাত্রলীগের অফিস নয়।ছাত্রলীগের লোকজন ডেকে আনার অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে তিনি দাবি করেন।