বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্যের এক জীবন্ত নিদর্শন ‘ধানকোড়া জমিদার বাড়ি।

মোঃ সাইফুল ইসলাম,ধামরাই প্রতিবেদনঃ ধানকোড়া জমিদার বাড়ি উনিশ শতকের স্থাপত্য কৌশলের একটি অন্যতম নিদর্শন। জমিদার বাড়িটি ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এ বাড়িটি থেকে তৎকালীন সময়ের মানুষের জীবন-জীবিকা, চাল-চলন, আনন্দ-বিনোদন আর শৌখিনতার পরিচয় পাওয়া যায়।
বর্তমান ধানকোড়া জমিদার বাড়ি বাংলাদেশ এর মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া নামক গ্রামে অবস্থিত এক ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি।

জমিদার বাড়ির প্রবেশপথে সিংহের ভাস্কর্য খচিত একটি প্রবেশাদ্বার রয়েছে এবং বসবাসের জন্য ইট, সুরকি ও রড দিয়ে তৈরি বিশাল অট্টালিকা রয়েছে।

জমিদার বাড়ির ভবনের একাংশ এখন বাংলাদেশ সরকারের ভূমি অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

এই জমিদার বংশধররা ভারতের দিল্লি থেকে বর্তমান বাংলাদেশের মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলায় এসে বসতি স্থাপন করেন এবং জমিদারী প্রতিষ্ঠা করেন। জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জমিদার নরসিংহ রায় চৌধুরী। তারপর জমিদারী প্রথা বিলুপ্তির আগ পর্যন্ত একেএকে জমিদার বংশধররা এই জমিদারীর দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। জমিদার নরসিংহ রায় চৌধুরীর ছেলে ছিলেন গিরিশগোবিন্দ রায় চৌধুরী। তার ছেলে ছিলেন হেমচন্দ্র রায় চৌধুরী। তার ছিল তিন ছেলে অমূল্যচন্দ্র রায় চৌধুরী, বীরেনচন্দ্র রায় চৌধুরী এবং নির্মলচন্দ্র রায় চৌধুরী। জমিদার বাড়ির পাশেই জমিদাররা একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। বিদ্যালয়টি জমিদার হেমচন্দ্র তার বাবা জমিদার গিরিগোবিন্দের নামে প্রতিষ্ঠা করেন। এই জমিদার বংশের আওতায় মোট ২৪টি কাছারি ছিল। বর্তমান ময়মনসিংহ জেলার জগন্নাথপুর ও খালিয়াজুড়ি নামক এলাকায়ও তাদের জমিদারী ছিল। দেশ ভাগের মধ্য দিয়ে জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হলে জমিদার বাড়ির বংশধররা ১৯৫২ সালে ভারতে চলে যান।

৭০ বছরের বৃদ্ধ স্বপন সরকারের সঙ্গে কথা বলতে বলতে আমরা অনেক ইতিহাসের মুখোমুখি হই, সাক্ষ্য পেয়ে যাই। বুঝতে পারি প্রতাপশালী জমিদারদের জমিজমা, বাড়ি ঘর ক্ষয়ে ক্ষয়ে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। সরকার যদি এ ব্যাপারে শক্ত, তড়িৎ কোনো পদক্ষেপ না নেয় তবে আগামী শতকে তার অস্তিত্বের সন্ধান করতে যেতে হবে আমাদের জাদুঘরে।

স্থানীয় মাসুদ রানা জানান, দেশের খ্যাতিমান পরিচালকদের চলচ্চিত্র, নাটক, টেলিফিল্ম, প্রামান্ন চিত্র নির্মাণের শুটিং করতে প্রায়ই দেখা যায় এ বাড়িতে।