নোয়াখালীতে ফাহিমা হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

ম.ব.হোসাইন নাঈম,নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ রাজগঞ্জ ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় এর দশম শ্রেণীর ছাত্রী ফাহিমা আক্তার হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেন স্কুল মাদ্রাসার হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও ছাত্র জনতা।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা অত্র উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সামনে রাজগঞ্জ ইউনিয়ন ও দারুল উলুম  ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এবং রাজগঞ্জ ছাত্র যুব কল্যাণ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবী এবং নিহত ফাহিমা আক্তারের পরিবার স্বজন সহ ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণ মানববন্ধনে অংশ গ্রহণ করেন।
রাজগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও রাজগঞ্জ ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর চৌধুরী সেলিমের সভাপতিত্বে স্কুলের সহকারী শিক্ষক-রাজগঞ্জ ছাত্র-যুব কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন রাজগঞ্জ ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব জসিম উদ্দিন, রাজগঞ্জ মাদ্রাসার ভাইস- প্রিন্সিপাল মহিউদ্দিন হাসান, মনির আহমদ, সাংবাদিক (সাবেক আরটিভি) হেদায়েত এবং নিহতের বাবা বেল্লাল নিহতের মা সহ এলাকার বিশিষ্ট জনরা।
নিহত ফাহিমের বাবা বেল্লাল হোসেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন তার মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে তিনি সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেন এক কিলোমিটার দীর্ঘ লাইনে তিন হাজার শিক্ষার্থী-জনতার মানববন্ধন বিক্ষোভে পরিণত হয়।
ক্ষুব্ধ জনতা বিক্ষোভ মিছিল করলে সবাইকে মানববন্ধন আয়োজক রাজগঞ্জ ছাত্র-যুব কল্যাণ ফাউন্ডেশন এর সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাইফুল ইসলাম মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারী সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে মানববন্ধন সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ জানুয়ারি মাইজদীর অনন্তপুরে শ্বশুরদের ভাড়া বাসায় রহস্যজনক মৃত্যু হয় ফাহিমা আক্তারের। ফাহিমা আক্তার অত্র ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের আলমপুর গ্রামের সর্দার বাড়ীর বেল্লালের মেয়ে।
জানা যায়, গত বছরের ২৫ জানুয়ারি এখলাশপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের কামদেবপুর গ্রামের শহিদ উল্লাহর ছেলে সাইফুল ইসলাম রাসেলের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় ফাহিমা আক্তারের। ফাহিমা আক্তারের পিতা বেল্লালের দাবি বিয়ের পর থেকেই তার মেয়েকে টাকার জন্য শ্বশুরবাড়ীর লোকজন মারধর করতো। তার মেয়ের জামাই রাসেল ব্যবসায়ের কথা বলে তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেয়। ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য বাবার বাড়ী থেকে আরো এক লক্ষ টাকা এনে দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে ফাহিমাকে। অসহায় পিতার অভাবের সংসারের কথা চিন্তা করে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার উপর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করতো বলে বেল্লাল অভিযোগ করেন। মেয়ের বাবা বেল্লাল আরো অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ে মারা যাওয়ার পরও আমাকে জানানো হয়নি। মেয়ের জামাই, দেবর, শ্বশুর মিলে আমার মেয়েকে মেরে সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তারা আমাকে ফোন দিয়ে বলে আমার মেয়ে মারা গেছে এখন সদর হাসপাতালের মর্গে আছে। বেল্লাল অভিযোগ করে বলেন, ময়নাতদন্তের পর আমি আমার মেয়েকে বাড়ীতে নিয়ে আসি । গোসলের সময় আমার মেয়ের শরীরের বিভিন্ন যায়গায় ক্ষত চিহ্ন ছিলো, ডানহাত ভাঙ্গা ছিলো, আঙ্গুল ভাঙ্গা ছিলো, গলা ও পিঠে দাগ ছিলো। তারা আমার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে । আমি তাদের ফাঁসি চাই।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি জানান, এই ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছেলের বাবাকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের তদন্ত চলছে।