বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে যমুনা ও বাঙালি নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বুধবার বিকাল থেকে মথুরাপাড়া পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৩ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ায় কৃষকরা অপরিপক্ব পাট কেটে নিচ্ছেন। পাশাপাশি কয়েকটি এলাকায় নদীর তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এসব এলাকায় ভাঙনরোধে দ্রুত কাজ শুরু করার আশ্বাস দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সারিয়াকান্দি উপজেলায় যমুনা নদীর পানির বিপৎসীমা ১৬.২৫ মিটার। গত সোমবার থেকে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি শুরু হয়। ওই দিন নদীতে পানির উচ্চতা ছিল ১৪.৭১ মিটার। বুধবার বিকাল ৩টায় পানির উচ্চতা ছিল ১৫.৯২ মিটার।
গত ৩ দিনে পানি এক মিটার ২১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি এখনো বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে যমুনা নদীর সাথে বাঙালি নদীর পানিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাঙালি নদীর বিপৎসীমা ১৫.৪০ মিটার। গত বৃহস্পতিবার এ নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৩.২৬ মিটার। বাঙালি নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার দুই মিটার ১৪ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কয়েক দিন আগে থেকেই উপজেলার চালুয়াবাড়ি ইউনিয়নের শিমুলতাইড় ও মানিকদাইড় গ্রামে এবং কামালপুর ইউনিয়নের ইছামারা গ্রামে যমুনা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত চালুয়াবাড়ি ইউনিয়নের প্রায় ৫০টি পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে অন্যত্র চলে গেছে।
জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম সেখানে দ্রুত জিও এবং টিওব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধে কাজ শুরু করার আশ্বাস দিয়েছেন।
এছাড়া যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার চালুয়াবাড়ি, কাজলা, কর্ণিবাড়ি, চন্দনবাইশা এবং বোহাইল ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফলে এসব এলাকার কৃষকরা অপরিপক্ব পাটগাছ কেটে নিচ্ছেন।
সারিয়াকান্দি উপজেলার সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন বলেন, যমুনার পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা আমাদের অপরিপক্ব পাটগাছ কেটে নিচ্ছি। এতে আমাদের লোকসান হবে। আর কয়েক দিন পর কাটতে পারলে ভালো হতো।
চালুয়াবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বাদশা বলেন, গত কয়েক দিনে যমুনার ভাঙনে শিমুলতাইড় গ্রামের ৪৩টি পরিবার এবং মানিকদাইড় গ্রামের ২০টি পরিবার তাদের বাড়িঘর ভেঙে নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, পানি বৃদ্ধির হার দেখে বোঝা যাচ্ছে বৃহস্পতিবারের মধ্যেই পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। উপজেলায় যমুনার ভাঙন কবলিত এলাকায় দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।