আসছে শিশুপার্ক প্রকল্প, ব্যয় হবে ৬০৩ কোটি টাকা

ছবি সংগৃহীত

ডেস্ক নিউজঃ এখনো কাটেনি অর্থনৈতিক সংকট, চলছে সরকারে কৃচ্ছ সাধন কার্যক্রম। এরই মধ্যে আসছে শিশু পার্ক উন্নয়ন প্রকল্প। ‘হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশু পার্ক আধুনিকীরণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৪৮৩ কোটি ৪ লাখ ৮২ হাজার টাকা এবং ডিএসসিসির নিজস্ব অর্থায়ন থেকে ১২০ কোটি ৭৬ লাখ ২০ হাজার টাকার জোগান আসবে।

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে এক্ষেত্রে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে-এ ধরনের প্রকল্প আরও পরে নিলেও চলত। বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে এমন প্রকল্প না নিলেও খুব বেশি সমস্য হওয়ার কথা নয়।

এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বর্তমানে ডলার সংকট চলছে। সেই সঙ্গে সার্বিকভাবে সৃষ্ট সংকট কাটেনি এখনো। ফলে সরকার কৃচ্ছ সাধনের নীতি নিয়েছে। এর মধ্যে শুধু উচ্চ অগ্রাধিকারের প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া উচিত। কিন্তু শিশু পার্ক উন্নয়ন প্রকল্পটি এই মুহূর্তের জন্য উচ্চ অগ্রাধিকার বলা যায় না।

এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, এখানে শিশুদের কথা চিন্তা করলে এটি অগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প নয়। কেননা শিশুরা খেলবে, আনন্দ করবে এটা তো আমরা সবাই চাই। এছাড়া প্রকল্পটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এটি বাস্তবায়িত হলে শিশুরা একসঙ্গে পুরো এলাকা ঘুরতে পারবে। মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কেও জানতে পারবে।

এজন্য একনেক বৈঠকে অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতা স্তম্ভের সঙ্গে শিশু পার্ক প্রকল্পের সমন্বয় করার নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে বিভিন্ন সময় উচ্চ অগ্রাধিকার না হলে সেই প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন, তাহলে এখন এ ধরনের প্রকল্প কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটিরও দরকার আছে।

প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন কাজের মধ্যে অন্যতম একটি হলো নগরবাসীর বিনোদন সেবার ব্যবস্থা করা। এর অংশ হিসাবে শহবাগ কেন্দ্রীয় শিশু পার্কটি নগরবাসীসহ শিশু-কিশোরদের দীর্ঘদিনের বিনোদন সেবা দিয়ে আসছে। এখানে ১১টি রাইড বা খেলনা বিদ্যমান ছিল। এর মধ্যে ব্যবহার অযোগ্য ৮টি রাইডস নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়।

তিনটি রাইড মেরামত করে স্থাপন কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। শিশু পার্কে রাইডগুলো দীর্ঘদিনের পুরোনো ও সীমিত হওয়ায় সেগুলো দিয়ে কাক্সিক্ষত বিনোদন সেবা দেওয়া যাচ্ছিল না। ফলে নতুন যুগোপযোগী এবং আধুনিক রাইড স্থাপন জরুরি। শিশু পার্কটি ঢাকা শহরের কেন্দ্রস্থলে হওয়ায় দৈনিক প্রায় ৭-৮ হাজার দর্শনার্থী আসেন। এছাড়া বিভিন্ন উৎসব যেমন, দুই ঈদ, পহেলা বৈশাখ, দুগাপূজা ইত্যাদি উপলক্ষ্যে প্রায় ৫০-৬০ হাজার দর্শনার্থীর আগমন ঘটে। এ প্রেক্ষাপটে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্তমানে কোনো শিশু পার্ক নেই। একটি জাতীয় শিশু পার্ক হিসাবে এর আধুনিকায়নের প্রয়োজন আছে। সংকট চলমান থাকলেও সমস্যা হবে না। কেননা অনুমোদন হলেই যে এই মুহূর্তে টাকা বরাদ্দ দিতে হবে, বিষয়টি তেমন নয়। আপাতত অনুমোদন দেওয়া হলো। সংকট কেটে গেলে তখন পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া হবে।