ডেস্ক নিউজঃ মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মার শাখা নদীতে পিকনিকের ট্রলারডুবিতে তিন শিশু এখনও নিখোঁজ রয়েছে। তাদের নাম তুরান (৮), নাফা (৫) ও মাহিন (৪) । এদের মধ্যে তুরান ও নাফা ভাইবোন। এই ঘটনায় আট লাশ, ৩৪ জনকে জীবিত ও দুর্ঘটনাকবলিত ট্রলারটি উদ্ধার করা হলেও হদিস মেলেনি এই তিন শিশুর।
দুর্ঘটনার পর প্রায় একদিন কেটে গেলেও সন্তানদের না পেয়ে পাগলপ্রায় তুরান-নাফার সিঙ্গাপুর প্রবাসী পিতা আরিফ হোসেন।
নদীর তীরে সন্তানের লাশের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা এই বাবা গ্ণমাধ্যমকে বলেন, আমি প্রায় আট বছর প্রবাসে থেকে দেশে আসি। আমার দুই সন্তান আমাকে এতিম করে আমাকে রেখে গেছে। যাদের জন্য আমার প্রবাসে থাকা।
তাদের চাচা তরিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গতকাল রাত থেকে ট্রলারে করে তাদের খুঁজতে খুঁজতে পাগলপ্রায়।
এদিকে, আট জনের মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় ধাক্কা দেওয়া বাল্কহেডের বাবুর্চিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মৃতরা হলেন— মোকসেদা বেগম (৪০), হ্যাপি আক্তার (২৮), পপি আক্তার (৩০), পপির দুই ছেলে সাকিবুল (১০) ও সজিবুল (৪), হুমায়রা (৫ মাস), ফারিয়ান (৮) ও রাকিবুল (১২)। তাদের সবার বাড়ি সিরাজদিখান উপজেলার লতাব্দি ইউনিয়নে।
জানা গেছে, শনিবার (৫আগস্ট) রাত ৮টার দিকে লৌহজং উপজেলার রসকাঠি এলাকার তালতলা-গৌরগঞ্জ খালে বাল্কহেডের ধাক্কায় পিকনিকের ওই ট্রলার ডুবে যায়। এতেই এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় এখনও তিন জন নিখোঁজ রয়েছেন। আর উদ্ধার হওয়া লাশ রাতেই স্থানীয় প্রশাসন স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে। লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে এলে এক করুণ দৃশ্যের অবতারণা হয়।
এদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দুর্ঘটনার প্রায় ১৫ ঘণ্টা পর ট্রলারটি তীরে টেনে তোলা হয়। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়ের উপপরিচালক ওবায়দুল করিম খান জানান, বৃষ্টি ও স্রোতের কারণে ট্রলারটি উদ্ধার করতে বেগ পেতে হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড, বিআইডব্লিউটিএ-এর সদস্যরা ট্রলারটি উদ্ধারে কাজ করেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডুবে যাওয়া স্থান থেকে ট্রলারটি উদ্ধার করা হয়েছে। ট্রলারে কোনও লাশ পাওয়া যায়নি। সেখানে আটটি মোবাইল, দুটি ব্যাগ, একটি সোনার চেইন পাওয়া গেছে।