ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিরিন হত্যা মামলার আসামীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ বকেয়া ভাড়া চাইতে গেলে বাড়ির মালিক শিরিনা বেগমের (৬০) সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় ভাড়াটিয়া আমিন মিয়ার (২৬)। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে পায়ের জুতা খুলে বাড়ি দিতে গেলে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শিরিনাকে হত্যা করেন আমিন। শিরিনা বেগম জেলা শহরের মধ্য মেড্ডার সবুজ আলীর স্ত্রী।
রোববার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরেফিন আহমেদ হ্যাপির আদালতে গ্রেফতার আমিন মিয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এই তথ্য জানান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহরাব আল হোসাইন জানান, মধ্য মেড্ডার মৃত হিরা মিয়ার ছেলে আমিন মিয়া একই এলাকার সবুজ আলীর বাড়িতে মাসিক এক হাজার ৪০০ টাকায় একটি টিনশেড ঘরে ভাড়া থাকেন। বাড়ির মালিক সবুজ আলী পরিবার নিয়ে পাশে আরেকটি বাড়িতে বসবাস করেন। গত ৩ মাস ধরে আমিন মিয়া বাসা ভাড়া দিচ্ছিলেন না। শনিবার সকালে সবুজ আলীর স্ত্রী শিরিনা বেগম ভাড়া চাইতে যান। তিনি আমিন মিয়ার কাছে তিন মাসের ভাড়া বাবদ ৪ হাজার ২০০ টাকা দাবি করেন।
এসময় দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হলে শিরিনা বেগম পায়ের জুতা খুলে আমিনকে মারতে যান। তখন আমিন একটি গামছা দিয়ে শিরিনার গলায় পেঁচিয়ে ফাঁস দিলে শ্বাসরোধে তিনি মারা যান। পরে শিরিনার মরদেহ লেপে মুড়িয়ে শয়ন কক্ষের খাটের নিচে লুকিয়ে রেখে দরজা তালা দিয়ে চলে যান আমিন, যোগ করেন পরিদর্শক সোহরাব আল হোসাইন।
এদিকে, দীর্ঘ সময় শিরিনা বেগম বাসায় ফেরায় তার আত্মীয়-স্বজন বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে বিকেলের দিকে আমিনের ঘরের দরজা খোলা দেখেন শিরিনার ছেলে। সেই ঘরে তল্লাশি করলে খাটের নিচে লেপে মোড়ানো শিরিনার অচেতন দেহ পেয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এরপর আমিনকে এলাকাবাসী গণধোলাই দিয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
এই ঘটনায় শিরিনার পরিবারের পক্ষ থেকে আমিন মিয়াসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে আমিন মিয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।