নেত্রকোণা সংবাদদাতা:
৬২ কিলোমিটার দীর্ঘ চর হাইজদা বাঁধটি নেত্রকোনার হাওড়াঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাঁধ। একসময় গাগলাজুর এলাকায় বাঁধটির পাঁচ কিলোমিটার অংশ খুব ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সিসি ব্লকের (পাথর ও সিমেন্টের তৈরি ব্লক) সাহায্যে ওই পাঁচ কিলোমিটার অংশে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তৎকালীন পরিদর্শনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভাওয়াল কনস্ট্রাকশনের তৈরী ব্লকগুলো নিম্ন মানের হওয়ায় তাদেরকে বিল কম দেওয়া হয় বলে সূত্রে জানা যায়। সেইসব নিম্ন মানের ব্লক পাওয়া গেল নেত্রকোণা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্মাণাধীন কলমাকান্দার পাবই বাজারে সামনের সড়কে। যা নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরী হয়েছে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার তৈরী হয়েছে।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, ভাওয়াল কনস্ট্রাকশন তাদের নিম্নমানের মোহগঞ্জের ব্লকগুলোই কলমাকান্দায় সড়ক ও জনপথের কাজে লাগিয়েছে। সূত্র বলছে, এসব ব্লক রাতের আঁধারে নিয়ে আসায় মোহনগঞ্জের হাইজদা বাঁধটি তৎকালীন সময়ে কোন পানির চাপ ছাড়াই ভেঙ্গে যায়।
উল্লেখ্য, ডিঙ্গাপোতা হাওড়ের ফসল রক্ষার জন্য চর হাইজদা বাঁধটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। ডিঙ্গাপোতায় প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমি আছে। আশির দশকে পানি উন্নয়ন বোর্ড ২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ চর হাইজদা বাঁধ নির্মাণ করে। ওই বাঁধের অতি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হচ্ছে গাগলাজুর থেকে জৈনপুর পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার।
এ বিষয়ে ভাওয়াল কনস্ট্রাকশনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাদের দায়িত্বশীল কারো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। দায়িত্বশীল কেউ বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।
এব্যাপারে জানতে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নেত্রকোণা অফিসের উপ.সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সোহাগ ফকিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখন কলমাকান্দায় চলে আসছি এবিষয়ে আমি বিস্তারিত এখন বলতে পারবো না। কিন্তু আপনার তত্বাবধানেই ব্লকগুলো মোহনগঞ্জ উপজেলা থেকে কলমাকান্দা আনা হয়েছে বলে সুনির্দিষ্ট কিছু তথ্য প্রমাণ আমরা পেয়েছি এমনকি আপনার কলমাকান্দা বদলী হয়ে আসার সাথে কলমাকান্দায় ব্লকগুলো আসার যোগসাজশ রয়েছে এবিষয়ে আপনার বক্তব্য কি জানতে চাইলে, উপ.সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সোহাগ ফকির বলেন, আমি কিছু জানিনা এক্সেন স্যারের সাথে কথা বলেন। দূর্নীতিতে সংশ্লিষ্টতার তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে আপনার আর বর্তমান নির্বাহী কর্মকর্তা সেসসময় ছিলেন না, কাজটির তদারকির দায়িত্বে ছিলেন আপনি এবং তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী এল.এম সৈকত। এবিষয়ে আপনার বক্তব্য কি, তাছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিরীক্ষায় বেরিয়ে আসা নিম্নমানের একই সিরিয়ালের ব্লক সড়ক ও জনপথের কাজে অন্য উপজেলা কি লাগানো যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি প্রসঙ্গ এড়িয়ে ফোন কেটে দেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নাম্বারখচিত একই সিরিয়ালের ব্লক কিভাবে সড়ক ও জনপথের কাজে মোহনগঞ্জ থেকে কলমাকান্দায় যায় এবিষয়ে নেত্রকোণা সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি এবিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।