বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের শক্তিশালী রায় পেতে পেশাজীবীদের সর্বাত্মক সহযোগিতা চান। এসময় দেশ গড়ার পরিকল্পনা,বাস্তবায়ন,জনসমর্থন এবং শক্তিশালী ম্যান্ডেটের প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জনপ্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনায় পেশাজীবী ও বিশিষ্টজনদের কাছে বিএনপির আগামী দিনের ভাবনা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, জনগণের দুর্বল রায় নিয়ে সরকার গঠন হলে অনেকগুলো কাজ করা সম্ভব নাও হতে পারে। আমরা দেশ গড়ার যে পরিকল্পনা করেছি, সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য অবশ্যই জনসমর্থন প্রয়োজন। সেজন্য আগামী সরকারকে শক্তিশালী ম্যান্ডেটের ওপরে দাঁড়াতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আগামী দিনে আমাদের শপথ হোক- আমরা যাতে আমাদের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তোলার কাজটি আগামী সরকারের মাধ্যমে শুরু করতে পারি। এই কাজের কোনো শেষ নেই। তবে শুরুটা ভালোভাবে করতে চাই।’
আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণের তারিখ রেখে গত বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন ঘিরে বিএনপি দলীয় কর্মসূচি নিয়ে বিভিন্ন ফোরামে আলোচনা করছে।
নীতি ও আইনকে অগ্রাধিকার দিয়ে দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ার ওপর জোর দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিগত সময়ে অনেককে অনেক অন্যায্য সুবিধা দেওয়া হয়েছে। তাই দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে হবে। সকলে মিলে নতুন বাংলাদেশ গড়তে দেশের পেশাজীবী ও বিশিষ্টজনদেরও এগিয়ে আসতে হবে।
রাষ্ট্র পরিচালনায় সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে তারেক রহমান বলেন, সবসময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। তবে জনপ্রিয় সিদ্ধান্তই যে সবসময় সঠিক সিদ্ধান্ত হবে, তা কিন্তু নয়। এ কারণে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়েও কথা বলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, আমাদের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা উন্নত করার পাশাপাশি যানজট কমাতে হবে। আগামীর সরকারের জন্য এটি হবে বড় একটি কাজ। কারণ যানজটের কারণে প্রতিদিনই অর্থ, সময় ও শ্রম নষ্ট হচ্ছে। আর সে কারণে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি।
যারা আগামীতে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করবে, তাদেরকে প্রথমেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘প্রথমেই আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে অনেক সমস্যা কমে আসবে; সঙ্গে বাকি কাজও শুরু করা যাবে।’
তারেক রহমান বলেন, আমরা দেখেছি বিগত স্বৈরাচারের সময়ে সমাজের বিভিন্ন স্তরে অন্যায্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এটা একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এটি পরিবর্তন করতে হবে।
পানি, যানজট, নারী ও প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে নজর দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, প্রান্তিক ও মাঝারি কৃষকদের আনা হবে কৃষক কার্ডের আওতায়। স্বাস্থ্যখাতে আরও ১ লাখ হেলথ কেয়ারার নিয়োগ দেওয়া হবে। অন্যদিকে শিক্ষকদের প্রশিক্ষিত করা হবে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
তারেক রহমান বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়নের নামে নতুন হাসপাতাল বা ভবন নির্মাণে বছরের পর বছর লেগে যাচ্ছে। এ কারণে সুফল পেতে জনগণকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কিন্তু বিএনপি পাবলিক-প্রাইভেট হাসপাতাল অংশীদারত্ব নীতির মাধ্যমে অল্প সময়ের মধ্যেই দেশের জনগণকে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারবে। এই নীতির আওতায় সরকারি হাসপাতালের অতিরিক্ত রোগীদের রাষ্ট্রীয় খরচে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হবে।
বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এই মতবিনিময় সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবী, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিক অংশ নেন।










