মোঃ বিপুল ইসলাম,
লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি ।
লালমনিরহাটে বিষাক্ত তামাক চাষ বাড়ছে। এ ফসলের আবাদ যেমন ফসলি জমির মাটির গুণাগুণ নষ্ট করে, তেমনি এর সংস্পর্শে থাকা কৃষকের স্বাস্থ্যের জন্যেও এটি ঝুঁকিপূর্ণ। অথচ সেই বিষাক্ত তামাক চাষ করছেন পরিবারের সবাই মিলে।
সরেজমিনে লালমনিরহাটের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে,
অধিকাংশ স্থানীয় কৃষকরা তাদের স্ত্রী, সন্তান, নিয়ে তামাকের ক্ষেত পরিচর্যা করছেন।
লালমনিরহাট জেলা সহ আদিতমারী উপজেলার রোপা আমন কেটে নিয়ে তামাক
রোপণ করছে।
নূর ইসলাম নামে এক কৃষক জানায়,তামাক কোম্পানির প্রণোদনার সার, বীজ ও কীটনাশকের কারণে এ কৃষিপণ্যের আবাদ করা তার জন্য সহজ হয়েছে।
প্রতি বছর এই সময়টায় পরিবারের সবাই সারা দিন ব্যস্ত থাকেন তামাকের জমি পরিচর্যায়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সাবেক (অবসরপ্রাপ্ত) উপপরিচালক বিধূভূষণ রায় বলেন, তামাক চাষে যে কৃষকের সামর্থ্য থাকে তারা শ্রমিক ভাড়া করে। কিন্তু অধিকাংশ চাষীর এ সামর্থ্য থাকে না। ফলে তামাক পাতা উঠানোর মৌসুমে বাড়ির নারী, পুরুষ শিশু সকলকে একসাথে মাঠে কাজ করতে হয়। এ সময় শিশুরা স্কুল কামাই করে তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে মাঠে কাজ করে। ফলে তামাক চাষীদের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এভাবে তাদের শিক্ষাজীবনে ব্যাঘাত সৃষ্টি হওয়ায় তারা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, তামাক চাষ থেকে প্রক্রিয়াজাতকরণ পর্যন্ত সময়কালে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে বিদ্যালয়ে ছাত্রদের উপস্থিতির হার কমে যায়। শিক্ষা জীবনে সমস্যার পাশাপাশি শিশুরা স্বাস্থ্যগত দিক থেকেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। বিনামূল্যে শ্রম প্রাপ্তির লক্ষ্যে তামাক চাষী তার পরিবারের সদস্যদেরকে তামাক চাষ থেকে প্রক্রিয়াজাতকরণ পর্যন্ত সকল কাজে সম্পৃক্ত করে। ফলে পারিবারিক জীবনযাত্রায় বিঘ্ন ঘটে।এ ব্যাপারে লালমনিরহাটের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক হামিদুর রহমান বলেন, তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করতে কৃষি বিভাগ নানান উদ্যোগ নেয়। তামাকের আবাদের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে সচেতন করার পাশাপাশি বিকল্প ফসল চাষে কৃষকদের নানান প্রণোদনা দেওয়া হয়। এ কারণে অধিক লাভের আশায় তামাকের বিকল্প ফসল চাষে কৃষকরা আগ্রহ কম দেখান।