স্বর্ণ ব্যবসার আড়ালে মানুষকে জিম্মি

ছবি সংগৃহীত

রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি বাসস্ট্যান্ডের রাজু জুয়েলার্সের মালিক স্বর্ণ ব্যবসায়ী রতন কর্মকারের বিরুদ্ধে স্বর্ণ ব্যবসার আড়ালে রমরমা সুদের ব্যবসা, সুদে আসলে টাকা ফেরত নেওয়ার পরও স্বর্ণের গহনা ফেরত না দেওয়া এবং উল্টো ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে।

এ ব্যাপারে বালিয়াকান্দি থানায় গত রোববার রাতে ও সোমবার সকালে দুটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বালিয়াকান্দি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আসাদুজ্জামান।

ভুক্তভোগী আব্দুল্লাহ মন্ডল বলেন, রতন কর্মকার স্বর্ণ ব্যবসার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে সুদের ব্যবসা করে আসছেন। সংসারের দায়বশত প্রায় ১৪ মাস আগে ৭ আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে বন্ধক রাখি রতন কর্মকারের কাছে। এর জন্য প্রতি মাসে তাকে ১৫০০ টাকা করে মোট ২১ হাজার টাকা সুদ দিয়েছি। পরে মূল ২০ হাজার টাকা দিয়ে বন্ধকি চেইনটি আনতে গেলে তিনি অতিরিক্ত আরও ১৫ হাজার টাকা দাবি করেন।

এই টাকা দিতে অপরাগতা স্বীকার করায় তিনি এখন আমার চেইনটি ফেরত দেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরকে জানালেও কোনো কাজ হয়নি। তাই উপায়ন্তর না পেয়ে আমি আইনের আশ্রয় গ্রহণ করেছি।

আরেক অভিযোগকারী পলাশ অধিকারী জানান, তিনি আরোবী জুয়েলার্সের কারিগর। তার দোকানে যদুপুর গ্রামের ফরিদ মোল্লার স্ত্রী সোনিয়া নামের একজন ক্রেতা আসে বন্ধকি রেখে কিছু টাকা নেওয়ার জন্য। সোনিয়া তার বিপদের কথা জানালে তিনি তার মালিকের সঙ্গে পরামর্শ করে পাশের দোকানদার রতন কর্মকারের কাছে ১৪ আনা ৫ রতি ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন ও এক জোড়া কানের পাশা বন্ধক রেখে ৫০ হাজার টাকা তাকে দেন। মাসখানেক পর বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গৌতম দের মাধ্যমে ৫৫ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে গহনা চাইলে তিনি টালবাহানা শুরু করেন। টাকা নিয়েও এখন পর্যন্ত তিনি গহনা ফেরত দেননি।

এ বিষয়ে রতন কর্মকারের দোকানে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়। তবে সুদে কারবারের কথা স্বীকার করে তার ছেলে রনি কর্মকার জানান, তাদের দোকানের কোনো ক্রেতা বিপদে পড়লে তাকে সহযোগিতা করা হয়। সুদ নেওয়া হয়, তবে তা সামান্য পরিমাণে।

বালিয়াকান্দি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আসাদুজ্জামান বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।