আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ আফগানিস্তানের সেনারা এখন দিনমজুর। অপ্রত্যাশিত জীবনের পরিণতি মেনে নিয়ে খনি শ্রমিকের কাজ করছেন। ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর চাকরি হারান হাজার হাজার সৈনিক। ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার দিকে ঝুঁকে পড়ে তাদের নিয়তি।
বেকারত্বের জীবন থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই বেছে নেন রত্নপাথর খননের কাজ। জীবিকার তাগিদে আফগানিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নুরিস্তান প্রদেশের রাজধানী পারুন থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের একটি খনিতে কাজ করে দেশটির সাবেক সেনাদের বড় একটি দল।
যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত আফগান সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা ন্যাশনাল ডিরেক্টরেট অব সিকিউরিটির (এনডিএস) সৈনিক আব্দুল কাদের আবিদ বলেন, তালেবান ক্ষমতায় আসার আগে খনিতে কাজ করা ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন আফগান ন্যাশনাল সিকিউরিটি ফোর্স (এএনএসএফ) বা সরকারে কর্মচারী। কেউ পুলিশের সঙ্গে কাজ করতেন। কেউ আবার ছিলেন সেনাবাহিনীতে। এখন তারাই খনিশ্রমিক। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে বেছে নিতে হয়েছে এ কাজ।
যদিও অনেক সাবেক সেনা খননের কাজটি করতে প্রথম প্রথম দ্বিধাবোধ করতেন। কিন্তু উপায় নেই। রত্ন খনির খাতটি ছোট হলেও আবিদের মতো স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য কাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিশেষ করে এমন একটি দেশে যেখানে তালেবান শাসনে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিচ্ছিন্নতায় জর্জরিত হয়ে আছে লাখ লাখ মানুষের জীবন।
আফগানিস্তানে রত্ন খনির একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। এটি আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের সময়কাল থেকে প্রায় ২৩০০ বছর বিস্তৃত। দশ শতকের মধ্যে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানের রত্ন খনিগুলো তাজিকিস্তান ও পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে বিখ্যাত ছিল। নামিদামি পাথরের মধ্যে ছিল-রুবি, নীলকান্তমণি, ট্যুরমালাইন, ল্যাপিস, লাজুলি ও পোখরাজ। সম্প্রতি নুরিস্তান, কুনার ও বাদাখশানের উত্তর-পূর্ব প্রদেশে রত্ন খনিগুলো তালেবানের আয়ের উৎস হিসাবে কাজ করে।