ডাক্তারের পরমর্শ ব্যতীত পেইনকিলার সেবন স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ

ফাইল ছবি

আলোকিত স্বদেশ ডেস্কঃ  বুকব্যথা, মাথাব্যথা, পায়ে ব্যথা, পেটব্যথা যেকোন ধরনের ব্যথা কমাতে সঙ্গে সঙ্গে আমরা হাতের কাছে ব্যথানাশক ওষুধ পেলেই খেয়ে ফেলি। ব্যথা নিরাময়ের জন্য ‘এলোমেলোভাবে’ ওষধু না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘খেয়াল-খুশিমতো ব্যথার ওষুধ খেলে কিডনিসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি হতে পারে।’

রবিবার (১২ জুন) সকালে বিএসএমএমইউ-তে ‘লো ব্যাক পেইন’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ব্লকের মিলনায়তনে ফিজিক্যাল মেডিসিন, রিউমাটোলজি বিভাগ ও  নিউরোসার্জারি বিভাগ যৌথভাবে এ সেমিনার আয়োজন করে।

‘ব্যথার ওষুধে অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে’ উল্লেখ করে উপাচার্য আরও বলেন, ‘নির্দিষ্ট মাত্রায় ওষুধ ছাড়াও ব্যথা নিরাময়ে রেডিয়েশন, হিট থেরাপি দেওয়া যেতে পারে। শেষে অপারেশেনের মাধ্যমে এ ব্যথা দূর করা হয়। অর্থাৎ কোমর ব্যথা নিরাময়ে শরীর চর্চা, নির্দিষ্টমাত্রার ওষুধ প্রয়োগ এবং সর্বশেষ অপারেশন করে লো ব্যাক পেইন প্রতিকার করা যায়। তবে নিয়ম-কানুন মেনে ব্যথা নিরাময় বা নিয়ন্ত্রণের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।’

তবে এজন্য প্রয়োজনে ফিজিক্যাল মেডিসিন, রিউমাটোলজি ও নিউরো সার্জারির মতো বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। আর প্রয়োজন হলে এমআরআই, সিটিস্ক্যান করে কোনধরনের চিকিৎসা লাগবে সেটি নির্ধারণ করা যায় বলেও জানান এই চিকিৎসক।

অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অনেকের হাঁটতে গেলে, চলতে গেলে ব্যথা হয়। কারও পিঠে ব্যথা, কারও কোমরে ব্যথা হয়। কেউ নিচু হয়ে কিছু তুলতে গেলেও এমন ব্যথা হয়; যাতে তাকে সারাদিন শুয়ে থাকতে হয়।  চেয়ারে বসে কাজ করতে গেলে অনেকে পিঠে ব্যথা অনুভব করেন।’

এ বিষয়ে সেমিনারে জানানো হয়, বেশির ভাগ মানুষের কোমরের ব্যথাই সাধারণ। কোমর ব্যথার শতকরা ৯০ ভাগ রোগীরই বিশ্রাম এবং কায়িকশ্রম করলে ভালো হয়ে যায়। অধিকাংশ কোমর ব্যথা নিয়মকানুন মানার মাধ্যমে প্রতিকার করা সম্ভব। এর বাইরে মেডিক্যাল ম্যানেজমেন্ট ও ফিজিক্যাল ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমেও অধিকাংশ কোমর ব্যথার প্রতিকার সম্ভব।

ব্যথা নিরাময়ে স্টোরয়েড প্রয়োগ করা থেকেও বিরত থাকতে হবে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, স্টেরয়েড শরীরের অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গের ক্ষতি করতে পারে। উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও ক্লুরোসকপি ও আলট্রাসাউন্ড গাইডেড ইন্টারভেনশন করা হয়। এর ফলে অপারেশন এড়ানো যায় এবং রোগীরা আর্থিক দিক থেকেও লাভবান হন।’

ইচ্ছেমতো পেইন কিলার গ্রহণে শরীরের কোনো রোগ হলে তার সঠিক চিকিৎসা হয়না, ফলে নিরবেই বিস্তার লাভ করতে পারে যে কোনো মরণব্যাধি।চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনোই  কোনো পেইন কিলার(ব্যথানাশক ওষুধ) গ্রহণ করা যাবেনা।