পকেট কমিটির ভাঙ্গা গড়ার খেলায় অতিষ্ঠ উত্তরা রাজউক কমার্শিয়াল মার্কেটের ব্যবসায়ীরা

আলোকিত স্বদেশ রিপোর্ট:

রাজধানীর উত্তরার রাজউক কর্মচারী বহুমুখী  সমবায় সমিতির, রাজউক কমার্শিয়াল কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ী উন্নয়ন কমিটির নামে চলছে নকশা বহির্ভূত ভাঙ্গা গড়ার খেলা।

মার্কেটের সাধারণ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ,   মার্কেটের পজিশন ব্যবসায়ীদেরকে না জানিয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কর্মচারীদের বহুমুখী সমবায় সমিতির  নেতাদের সাথে ছলচাতুরি করে  কয়েকজন ভাড়াটিয়ে নামধারী ব্যবসায়ী একটি পকেট কমিটি নিয়ে আসেন যার সভাপতি জহিরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি হিসেবে দাবি করে বিএম সুমন। মার্কেটের অবকাঠামো ও  সুন্দর্য নষ্ট করে নকশা বহির্ভূত আনাচে-কানাচে দোকান তুলে বরাদ্দ দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে লাখো টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে নামধারী পকেট কমিটির সভাপতি ও সেক্রেটারি।

মার্কেটটির ব্যবসায়ীদের আরও অভিযোগ, দীর্ঘদিন যাবৎ একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল রাজউক কর্মচারী সমিতির নেতাদের কাছে। এছাড়াও হোল্ডিং টেক্সের জন্য ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন গত বছর রমজান ঈদের আগমূহুর্তে ভ্রাম্যমাণ আদালত মার্কেটটিতে অভিযান চালিয়ে কিছু দিনের জন্য বন্ধকরে দিলেও, ব্যবসা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হন।

এ সময় ব্যবসায়ীরা ঢাকা ১৮ আসনের সংসদ সদস্য আলহ্বাজ হাবীব হাসানের কাছে অভিযোগ দিলে তিনি মহানগর উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম সমন্বয়ে  ব্যবসায়ীদের কথা বিবেচনা করে মার্কেটটি পুনরায় খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। পাশাপাশি একটি নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিলে মার্কেটটিতে সভাপতি  মো. আওলাদ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলামকে আহবায়ক  করে একটি নতুন কমিটি গঠন করেন ব্যবসায়ীরা।

তবে মেয়রের নির্দেশ ও আহ্বায়ক কমিটিকে বুড়ো আংগুল দেখিয়ে গোপনে রাজউক কর্মচারী সমিতির নেতাদের সাথে আর্থিক লেনদেন এর মাধ্যমে পকেট কমিটি নিয়ে আসেন জহিরুল ইসলাম ও বিএম সুমন।

কে এই সুমন

রাজউক কমার্শিয়াল মার্কেটের কম্পিউটার ফ্লোর চালু হলে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে ল্যাপটপ ও ডেক্সটপ মেরামতের কাজ করেন সুমন। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবৎ ফ্লোর মালিকের ভাড়া বকেয়া রেখে জোরপূর্বক দোকান করার কারণে ফ্লোর কর্তৃপক্ষ বি এম সুমনের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ডাইরি নং ৬৯৭।

ডায়েরিতে তিনি উল্লেখ করেন, উত্তরা সিটি কম্পিউটার মার্কেটের ম্যানেজার মিন্নত আলী দোকানের ভাড়া টাকা চাইতে গেলে তাকেও প্রাণনাশের হুমকি দেয় ও উত্তরার কিশোর গ্যাং এর  সদস্যদেরকে নিয়ে এসে দোকানে বসিয়ে রাখেন যেন, ভাড়া টাকা চাইতে সাহস না পায়  মিন্নত আলী। এছাড়াও গেল 4/11/2020 তারিখ তার বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় উত্তরা  কম্পিউটার সিটির নিজস্ব পেটে লিখে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন মিন্নত আলী। ডাইরি নং 278।

ডাইরিতে তিনি উল্লেখ করেন,  উত্তরা রাজউক কমার্শিয়াল মার্কেটের ষষ্ঠ তলায় কম্পিউটার সিটির 622 ও 625 নং দোকান ভাড়া নেন বিএম সুমন। তার কাছে  দোকান ভাড়া ও সার্ভিস চার্জ এবং বিদ্যুৎ বিল বাবদ ৩ লাখ টাকার উপরে পাওনা রয়েছে।

এ বকেয়া টাকা পরিশোধের জন্য বারবার অফিশিয়াল ভাবে তাকে  নোটিশ প্রদান করা হলে তিনি কোনো কর্ণপাত না করে‌ বিভিন্ন তালবাহানা করে সময় নষ্ট  করেন এবং শারীরিক শক্তি প্রদর্শন করেন।

এ বিষয়ে কম্পিউটার সিটির ম্যানেজার মিন্নত আলী সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,  সুমন আমাদের ফ্লোরে 622 ও 625 দোকানের ভাড়াটিয়ে  কিন্তু এ যাবদ আমাদেরকে কোন ভাড়া পরিশোধ করিতেছে না। ভাড়া চাইতে গেলে বিভিন্ন সন্ত্রাস বাহিনী দিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেন।

আমি একাধিক সাধারণ ডাইরি করেছি। এবং মার্কেটের নিয়ম ভঙ্গ করে বহিরাগত ক্যাডার বাহিনী কিশোরগ্যাং তার দোকানে আনাগোনা রয়েছে। আমরা বর্তমানে তার  কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছি।

অন্যদিকে একই মার্কেটের পঞ্চম তলার এক ব্যাবসায়ী  উত্তরা পশ্চিম থানায় 23/11/ 2019 সালে সুমনের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ডাইরি নং 1628। ডাইরিতে সুমনের বিভিন্ন জুলুম অত্যাচার ও প্রাণনাশের হুমকির কথা উল্লেখ করেন।

এছাড়াও সুমনের বিরুদ্ধে একাধিক ব্যবসায়ী তার বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ ডাইরি  ও মামলা করেছেন।

সে মামলায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে গিয়েছেন তিনি। পরে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন তবে মামলা চলমান রয়েছে।

বর্তমানে সুমন বিশ্বাস মার্কেটটির ব্যবসায়ীদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে ষষ্ঠ তলার 622 ও 625 নম্বার দোকানের তিন বছরের ভাড়া ও সার্ভিস চার্জ  এবং বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করার জন্য পকেট কমিটি সাধারণ সম্পাদক পদ ভাগিয়ে নিয়ে  অবৈধভাবে নকশা বহির্ভূত মেইন ফটকের সামনে ফুটপাত দখল করে দোকান তৈরি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ব্যবসায়ীরা। তবে এর আগে একই স্থানে থাকা দোকানটি  উত্তরার উপ-পুলিশ কমিশনারের নির্দেষে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ উচ্ছেদ  করে  ফুটপাতটি দখলমুক্ত করেন।

বর্তমানে উপ-পুলিশ কমিশনারের নির্দেশ অমান্য করে সেই ফুটপাতের উপর দোকান করার পায়তারা  করিতেছেন কথিত  সভাপতি ও সেক্রেটারি।