লাইফস্টাইল ডেস্ক:
ধলাই নদীর মনোলোভা রূপ, সবুজ পাহাড়ে ঘেরা এলাকাজুড়ে অজস্র সাদাপাথর। আকাশের নীল ছায়া রেখে যায় পাথরে জমে থাকা স্ফটিক জলে। দূরের পাহাড়গুলোর ওপর মেঘের ছড়াছড়ি, সঙ্গে এক-দুটা ঝরনার গড়িয়ে পড়া। নদীর টলমলে হাঁটু পানির তলায় বালুর গালিচা। চিকচিকে রূপালি বালু আর ছোট-বড় সাদা অসংখ্য পাথর মিলে এ যেন এক পাথরের রাজ্য।
প্রকৃতির খেয়ালে গড়া নিখুঁত ছবির মতো সুন্দর জায়গাটি ভোলাগঞ্জ। এ যেন সাদা পাথরের আরেক বিছানাকান্দি।
সিলেটের কোম্পানিগঞ্জের ভোলাগঞ্জ দেশের বৃহত্তম পাথর কোয়ারী অঞ্চল। সিলেট শহর থেকে এর দূরত্ব মাত্র ৩৩ কিলোমিটার। ধলাই নদীর সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে ছোট-বড় সাদা রঙের পাথরগুলো। ভারত থেকে প্রচুর পাথর সেখানে জমা হয়। যা বছরজুড়ে শ্রমিকরা উত্তোলন করে থাকে। এত পাথর বাংলাদেশের কোথাও নেই।
অসাধারণ প্রাকৃতিক শোভার স্থান এই ভোলাগঞ্জ। সঙ্গে বাড়তি পাওনা হিসেবে পাবেন ধোলাই নদীর নয়নাভিরাম সৌন্দর্য। চারদিকে শুধু সাদা রঙা পাথর আর পাথর। এতো সাদা পাথর হয়তো জীবনে কখনোই দেখেননি।
নির্জন নৈসর্গিক এই জায়গাটিতে সামনে সবুজ পাহাড়ের সারি, পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়া প্রচুর স্রোতের স্বচ্ছ শীতল জল। এ জলে অবগাহন করে সকল ক্লান্তি-অবসাদ নিমিষেই দূর করতে পারবেন। মন-প্রাণ হয়ে উঠবে সতেজ ও প্রাণবন্ত। পানি আর সাদা পাথরের জাদুকরী শীতল স্পর্শ আপনাকে বিমোহিত করবেই।
পৃথিবীর সর্বাধিক বৃষ্টি বহুল এলাকা চেরাপুঞ্জির অবস্থান ভারতের পাহাড়ী রাজ্য মেঘালয়ে। ধলাই নদীর উজানে এ রাজ্যের অবস্থান। খাসিয়া জৈন্তিয়া পাহাড় ঘেরা এ রাজ্যের দৃশ্য বড়ই মনোরম। ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে এলাকায় অবস্থান করে পাহাড়-টিলার মনোরম দৃশ্যাবলি অবলোকন করা যায়।
বর্ষাকালে চেরাপুঞ্জির বৃষ্টির পানি ধলাই নদীতে পাহাড়ী ঢলের সৃষ্টি করে। গ্রীষ্মকালে অনেকে ধলাই নদীকে মরানদী হিসাবে অভিহিত করলেও বর্ষায় নদীটি ফুলে ফেঁপে ওঠে।
সিলেটের আম্বরখানা থেকে ভোলাগঞ্জ যাবার সিএনজি পাওয়া যায়। লোকাল সিএনজিতে করে জনপ্রতি ভাড়া ১৩০-১৫০ টাকা ভাড়ায় ভোলাগঞ্জ যেতে পারবেন। চাইলে রিজার্ভও যাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে ভাড়া পড়বে যাওয়া আসা মিলে ১২০০-১৩০০ টাকা। এক সিএনজিতে ৫ জন বসা যায়।
ভোলাগঞ্জ বাজারে নেমে দশ নম্বর নৌকা ঘাটে যেতে হবে। নৌকা ঘাট থেকে যাওয়া ও আসাসহ ৮০০ টাকা নৌকা ভাড়ায় ঘুরে আসতে পারবেন সাদা পাথর। প্রতি নৌকায় সর্বোচ্চ ১০ জন যেতে পারবেন।