মো. সাইফুল ইসলাম ,ধামরাই (ঢাকা) থেকে:
ঢাকার ধামরাই উপজেলার ছোট ভাকুলিয়া গ্রামে বংশী নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে বসতবাড়ি হারিয়ে সর্বশান্ত কয়েকটি পরিবার মানবতার জীবনযাপন করছেন। এছাড়া হুমকির মুখে রয়েছে ফসলি জমি, মসজিদ ও অর্ধশত বসতবাড়ি।
স্থানীয়রা বলেন, ভাঙন এভাবে চললে আমরা খুবই বিপদের মুখে পড়বো, আমাদের গ্রামে একটিমাত্র মসজিদ এটিও নদীর গর্ভে চলে যাবে বলে মনে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর পাড়ের কয়েকটি বাড়ি পুরোপুরি বিলীন হয়ে গেছে। বসতবাড়ি হারিয়ে অন্যের বাড়িতে রয়েছেন তারা। কেউ কেউ বাস করছেন রাস্তার মোরে। কয়েকজন হারিয়েছে তাদের একমাত্র সম্বল ফসলি জমি। প্রতিমূহুর্তেই ভেঙে পড়ছে খন্ড খন্ড মাটি, নদীর পানি যত বাড়ছে ভাঙন ততই বেগবান হচ্ছে বলে জানায় এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে বসতবাড়ি হারানো মো. আব্দুল জলিল বলেন, দুই দিন আগেও আমার বাড়ি ছিল কিন্তু এখন নদী হয়ে গেছে আমার এই বাড়িই ছিল শেষ সম্বল। এখন আমার থাকার জায়গাও নাই।
মো. আজিজ বলেন, আমার বাড়ি ভেঙে যাওয়ার কারণে আমি অন্যের বাড়িতে বাস করছি। বাড়ি বানানোর সামর্থ নাই। আমি এখন পরিবার নিয়ে কোথায় যাব।
বসতবাড়ি হারিয়ে কয়েক বছর আগে বাড়ি করেছিলেন মো. শামছুল হক কিন্তু সেটি এখন আবারও ভাঙনের মুখে। শামছুল হক বলনে, এই বাড়িটি ভেঙে গেলে আমার আর কিছু থাকবে না।
মো. আলীম উদ্দিন বলেন, আমাদের গ্রামে একটামাত্র মসজিদ। আমরা সবাই মিলে অনেক কষ্টে পাকা করেছি। এভাবে ভাঙতে থাকলে হয়তো এটাও নদীতে চলে যাবে।
জানা যায়, কয়েক বছরে বাড়ি হারিয়েছেন এই গ্রামের মো. ফজর আলী, মো. সুলতান মিয়া, মো. বাসেদ আলী, মো. মোখলেছ আলী, মো. হালিম ও আব্দুল আলীসহ অনেক পরিবার।
জানা যায়, ভাঙনের বিষয়ে কেউ কোন খোঁজ খবর নেয়নি, বিপদগ্রস্থ এই মানুষগুলো তাদের বসতবাড়ি, ফসলি জমি রক্ষায় সরকার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছেন।
এই বিষয়ে চৌহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পারভীন হাসান প্রীতি বলেন, ছোট ভাকুলিয়া গ্রামে নদী ভাঙনের কারণে মানুষের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আমি দ্রুত নদী ভাঙন ঠেকাতে ইউএনওকে সাথে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এ বিষয়ে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকি বলেন, ছোট ভাকুলিয়া গ্রামের বংশি নদীতে ঘরবাড়ী ভাঙনের খবর পেয়েছি। ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে ভাঙন ঠেকাতে সরকারিভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।