যশোর প্রতিনিধি:
বর্ষার জলে থৈ থৈ যশোরের মাঠ, খাল, বিল, বাঁওড় ও নদী। এখন পাঁটের মৌসুম। একাধারে চলছে কাটা, জাগ দেওয়া পাটের আঁশ ছাড়ানো ও ধুয়ে আঁটি বাঁধার কাজ।
যশোর ও শহরের আশপাশের গ্রামীণ জনপদে যারা পাট চাষ করেছেন। রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে পাট ঘরে তোলার কাজে নেমেছে কৃষক। বসে নেই কৃষাণিরাও।
যশোরের হরিণার বিলের উত্তর সাড়াপোলে দিন হাজিরার কর্মী অনিক এর কাছ থেকে জানা যায়, আঁটি প্রতি ২০ টাকা দরে আঁশ ছাড়িয়ে ধোঁয়ার পর প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০ আঁটি পর্যন্ত তারা বাঁধতে পারেন।
রাব্বি বিল্লা ট্রলিচালক। বর্তমানে পাট ও পাটকাঠি টানার কাজ করছেন। পাট বহনে আঁটি প্রতি ৫ টাকা থেকে ৮ টাকা আর দূরত্ব ভেদে এই দর আরো উঠে। প্রতিদিন ২ থেকে ৩ বিঘা জমির পাট ও পাটকাঠি বহনের করে, মন ভালো থাকলে বেশি হয় বলে জানান।
কৃষক মনি মন্ডল বলেন, বিঘা প্রতি ৮ থেকে ১০ মণ পাটের ফলন পাওয়া যাচ্ছে । কিছু পাঁট তিনি বিক্রিও করেছেন মণপ্রতি দাম মিলেছে ১ হাজার ৭শ’ টাকা থেকে ১ হাজার ৮শ’ টাকা দরে । আর এখন যেসব পাট উঠছে সেগুলোর সর্বনিম্ন দাম ২ হাজার ৪শ’ টাকা। বাজার ভালো থাকলে মোটামুটি লাভবান হবেন।
জেলার কৃষিবিভাগ সূত্রে জানা যায়, যশোরে এবার লক্ষ্যমাত্রারও বেশি পাটের আবাদ হয়েছে। চলতি মৌসুমে আট উপজেলায় পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়, ২৫ হাজার ৩০০ হেক্টর। আবাদ হয়েছে তার চেয়েও বেশি। এ বছর মোট ২৬ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। গত মৌসুমে আবাদ হয়েছিল ২৩ হাজার ৫৬৫ হেক্টর।
তথ্য পরিসংখ্যান মতে, লাভজনক হয়ে ওঠায় যশোরে পাটের চাষাবাদ ও উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানভেদে আগাম তোলা এসব পাট ১ হাজার ৮শ’ থেকে ২ হাজার ৭শ’ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক চন্দ্র বিশ্বাস জানান, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতে লাভবান হয়েছেন যশোরের কৃষক। বিশেষ পাটের জাগ দেওয়ার জন্য সুবিধাজনক হয়েছে এই বৃষ্টিপাত। জলাধারে পানি বেড়েছে। ফলে পাট জাগ দেয়া, আঁশ ছাড়িয়ে ধোয়ার কাজটি ভালোমতন করা যাচ্ছে। এতে পাটের আঁশের রং ভালো হবে। ফলে দামও ভালো মিলবে। বর্তমানে পাটের বাজার দর ভালো যাচ্ছে।