বিএনপির নির্বাচন বর্জনের আহ্বানের সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কোনো সম্পৃক্ততা আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াতের গুজব ও প্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে জনগণকে নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনের পরও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে, এর কঠোর জবাব দিতে হবে। নির্বাচন হয়ে যাক, কোনো সন্ত্রাসী পার পাবে না। তাদের বিচার হবে। বিএনপিকে কোথাও রাজপথে দাঁড়াতে দেব না। আমরা কঠোর হতে জানি, সময়মতো সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আজ শনিবার সকালে নিজ নির্বাচনী এলাকায় এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ও তাদের দোসররা নাশকতা অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক সন্ত্রাসী তৎপরতা শুরু করেছে। গতকাল তারা ঢাকার গোপীবাগে ট্রেনে অগ্নিসংযোগ করে দুজন শিশুসহ চারজনকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় কয়েকজন অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। এ ঘৃণ্য নৃশংস সন্ত্রাসের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। ’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি দেশকে ধ্বংস করতে চায়, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করতে চায়। এরা একাত্তরের পরাজিত শক্তি ৭৫-এর ঘাতক দল, এদের বিশ্বাস করা যায় না। এরা মানুষকে পুড়িয়ে রাজনীতি করতে চায়। কানাডার ফেডারেল রায় অনুযায়ী, বিএনপি আবারও প্রমাণ করল তারা একটি সন্ত্রাসী সংগঠন।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির ভোট অর্জনের ডাক দিয়েছে এবং তারা প্রতিনিয়ত নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনবিরোধী অপপ্রচার করে যাচ্ছে। বিএনপি’র ভোট অর্জনের সঙ্গে চলমান সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কোনো সম্পৃক্ততা আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখতে হবে। বাংলাদেশ কোনো অপশক্তির কাছে কখনো মাথা নত করেনি এবং ভবিষ্যতেও করবে না।’
সারাদেশে শান্তিপূর্ণ ভোট হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। বিদেশি পর্যবেক্ষক সাংবাদিক যারা এসেছেন তারাও নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। আজকে যে অপশক্তি নির্বাচন বর্জন করেছে তাদের সন্ত্রাসীর চরিত্রের প্রমাণ আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। তারা বাসে আগুন দিচ্ছে, ট্রেনে আগুন দিচ্ছে। এদের সন্ত্রাসী চরিত্র সম্পর্কে আমরা বাংলাদেশের মানুষ অবগত। বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের কাছে আমরা এই সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি গণতন্ত্রের হত্যাকারী ও গণতন্ত্র হরণকারী দল। মানুষের অধিকার হরণ করাই বিএনপির কাজ। এরা বিদেশীদের কাছে নালিশ দিয়ে বার বার। বিএনপি একটি গুজব পার্টি। তারা গুজব ছড়াচ্ছে। জনগণের প্রতি আমাদের আহ্বান তাদের গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না। নির্বাচনে আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য যে কর্মসূচি নিয়েছে তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করুন। আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নিয়োজিত আছেন, আপনারা নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্র আসুন দলে দলে নিজেদের সাংবিধানিক অধিকার বাস্তবায়ন করে ইচ্ছা ভোট দেবেন। কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ ও ভয়ভীতির কাছে নতি স্বীকার করবেন না। যারা ভোট প্রদানে বাধা সৃষ্টি করবে তাদের প্রতিহত করুন।’
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সতর্ক থাকবেন, বিএনপি যেন নাশকতা করতে না পারে। আমরা বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে। কেউ যেন বিজয় ছিনিয়ে না নিতে পারে, সেজন্যে সতর্ক থাকুন। আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটে আবার সরকার গঠন করবে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আবারও প্রধানমন্ত্রী হয়ে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে নেতৃত্ব দেবেন। আমরা বিপুল ভোটে বিজয়ী হব, ইনশাল্লাহ।’