নেত্রকোনা সংবাদাতা :
নেত্রকোণা সদর উপজেলার জাহাঙ্গীরপূর গ্ৰামটি শাকসবজি চাষের জন্য জেলায় বিখ্যাত। এই গ্ৰামের শিক্ষিত যুবক শাহজাদা একসময় চাকুরীতে যোগদান না করে পৈতৃক জমিতে বিভিন্ন ধরনের উন্নত জাতের শাকসবজি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। একদিন ইউটিউবে ভারতীয় যুবকের চাষ করা চায়না কমলার বাগান দেখে আকৃষ্ট হন বিষমুক্ত চায়না কমলা চাষে । পরে এক ভারতীয় বন্ধুর পরামর্শে চুয়াডাঙ্গা জেলার এক ফলচাষীর কাছ থেকে একশো চায়না কমলার চারা এনে বাগানে রোপন করেন। এতেই তার ভাগ্য বদলাতে শুরু করে।
শাহজাদা বলেন, কোন প্রকার ক্যামিকেল সার ও কীটনাশক ব্যবহার না করে গোবর ও পানি দিয়ে জৈবিক পদ্ধতিতে শুরু করেন চায়না কমলা চাষ। এতে সফলতা ও লাভের মুখ দেখছেন তিনি। তার বাগানের কমলা বাজারে আমদানি করা চায়না কমলা অপেক্ষা আকারে বড় এবং লাল টকটকে, সুস্বাদু ও বিষমুক্ত। প্রতিদিন বিষমুক্ত আকর্ষণীয় কমলার বাগান দেখতে অগণিত মানুষ ভিড় জমাচ্ছে। ইতোমধ্যে তার চাষ করা চায়না কমলা এলাকায় ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। প্রতিমাসে চায়না কমলা বিক্রি করে প্রায় দুই লাখ টাকা আয় হচ্ছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে আরো বেশি লাভবান হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। এছাড়া তরুন উদ্যোক্তাদের এ কমলা চাষে উৎসাহ দেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা লাল মিয়া জানান, শাহজাদার এই সাফল্যে আমরা অনেক খুশি । চার বছরে অর্থনৈতিক ভাবে বেশ লাভবান হয়েছে শাহজাদা। এই ধরনের উদ্যোগ বেকারত্ব সমস্যা সমাধান ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।
সজিব মিয়া নামের আরেকজন জানান, এখন ফরমালিং ছাড়াতো কোন ফলই পাওয়া যায় না। আর এই বাগানে কোনা প্রকার ক্যামিকেল ও কীটনাশক ব্যবহার না করে জৈবিক পদ্ধতিতে কমলা চাষ করা হয়। বাগানের কমলা বাজারে আমদানি করা চায়না কমলা অপেক্ষা আকারে বড় এবং লাল টকটকে, সুস্বাদু ও বিষমুক্ত তাই সব সময় এখান থেকে ফল কিনে নিয়ে যাই।
জৈবিক পদ্ধতিতে চায়না কমলা চাষের সফলতা দেখে অবাক জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা। জেলা উদ্যান কর্মকর্তা শাহজাদাকে কমলা জৈবিক পদ্ধতিতে চাষে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
নেত্রকোনা জেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, এখানকার চাষিদের ফল বা সবজি চাষের ক্ষেত্রে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেয়া হয়। শাহাজাদাকেও চায়না কমলা চাষের বিষয়ে পরামর্শ্ দেয়া হয়েছে। তার এ কমলা চাষ দেখে অনেকেই এগিয়ে আসছেন বলে জানান তিনি।