প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান ও আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়ার সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকগুলোতে দ্বিপক্ষীয় গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।
বুধবার জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়। তাতে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন প্রশ্নের লিখিত জবাব দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন বিদেশ সফরে রয়েছেন।
টেবিলে উপস্থাপিত প্রশ্নোত্তরে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে এবং আমার ওয়াশিংটন সফরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান ওয়াশিংটন ডিসিতে এবং বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া নিউইয়র্কে আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসব বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়, যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।’
সরকারি দলের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা রোধ করতে একটি দুষ্টচক্র দেশে-বিদেশে সরকার এবং দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। ওই দুষ্টচক্রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সংস্থা কাজ করছে।
পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলসহ বিভিন্ন বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা তুলে ধরে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, এসব অবকাঠামো বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার মুকুটে নতুন নতুন স্বর্ণপালক যুক্ত করেছে। বাস্তবায়িত প্রকল্পসমূহের মাধ্যমে দেশের জনগণ বহুমুখী অর্থনৈতিক সুফল পাচ্ছেন।
দুষ্টচক্র অপপ্রচার চালাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার মোকাবিলাসহ বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার জন্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এবং অনলাইন মিডিয়াতে নিয়মিতভাবে তথ্যবহুল ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ, প্রবন্ধ ও নিবন্ধ প্রকাশের এবং কনটেন্ট প্রচারের বিষয়ে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলো নানা রকম সভা বা আলোচনা অনুষ্ঠান করছে।
ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বন্ধে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে চলেছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, যেসব অসত্য বা বিকৃত খবর ও গুজব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হয়, সেগুলো চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, গুজব ও অপপ্রচার রোধে ১৫টি প্রতিবেদন, ৭২টি তথ্যবিবরণী, ১টি প্রেসনোট জারিসহ ৭টি ফিচার তথ্য অধিদপ্তর থেকে জাতীয় দৈনিকে প্রকাশ করা হয়েছে।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প সহনীয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হলে বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ সারা দেশের অর্থনীতির ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এ টানেল যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার পর আনোয়ারা প্রান্তে আবাসন ও পর্যটনশিল্পের বিকাশ, কলকারখানা স্থাপন ও সহজ যোগাযোগব্যবস্থার কারণে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বঙ্গোপসাগরকে ঘিরে আবর্তিত সুনীল অর্থনীতির (ব্লু ইকোনমি) নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। চট্টগ্রামে ওয়ান সিটি টু মডেল টাউন গড়ে উঠবে।