আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মরক্কোর ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত প্রাণহানির সংখ্যা ২ হাজার ৪৭৬ জন। আহত হয়েছেন ২ হাজার ৪৯৭ জন। দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা জানিয়েছে, অনেক নাগরিক তিন দিন ধরে ছিন্নমূলের মতো খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছেন।
গত ছয় দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে দেশটির মারাকেশ শহর। ৪৮ ঘণ্টা পরও মিলছে প্রাণের সন্ধান। খবর রয়টার্সের।
শুক্রবার মরক্কোর মধ্যাঞ্চলে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়। ধ্বংসস্তূপের ভেতরে আটকে পড়াদের জীবিত উদ্ধারে সব রকমের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী ও উদ্ধারকারীরা।
কর্তৃপক্ষ জানায়, ভূমিকম্পের পর দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বেশ কিছু গ্রাম পুরোপুরি মাটিতে মিশে গেছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ওউরগেইন উপত্যকায় যতই সময় গড়াচ্ছে ততই বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। আহত অবস্থায় যারা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তাদের মধ্যেও অনেকের অবস্থা গুরুত্বর বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া এখনো কত মানুষ নিখোঁজ রয়েছে তার সঠিক সংখ্যাও জানা সম্ভব হয়নি।
দেশটির সেনাবাহিনী ও উদ্ধারকারীরা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পার্বত্য গ্রামগুলোতে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছেন। তবে, দুর্গম হওয়ায় অনেক এলাকায় পৌঁছাতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। অনেক স্থানে ভবনের ধ্বংসস্তূপে এখনো বহু মানুষ আটকা পড়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কাও করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা রেডক্রসের পরিচালক এক বিবৃতিতে বলেন, জীবিতদের উদ্ধারে পরবর্তী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দুর্গম অঞ্চলগুলোতে উদ্ধার অভিযান জোরদার করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এজন্য ভারি সরঞ্জামেরও প্রয়োজন হবে। একইসঙ্গে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো পুনর্গঠনে কয়েক বছর সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে দুর্গতদের উদ্ধার তৎপরতায় বিভিন্ন দেশ হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, স্পেন, ও যুক্তরাজ্য থেকে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছেছে দেশটিতে।
স্পেন কুকুরসহ ৫৬ জনের একটি উদ্ধারকারী দল পাঠিয়েছে। তুরস্ক, ফ্রান্স ও ইসরাইল প্রয়োজনে সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে।
এছাড়া মানবিক ও চিকিৎসা সহায়তার জন্য আকাশপথ খুলে দিয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশ আলজেরিয়া। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা থাকা সত্ত্বেও এক বিবৃতিতে মরক্কোয় আঘাত হানা ভূমিকম্পের পরিপ্রেক্ষিতে মানবিক সহায়তা করা হবে বলে জানিয়েছে আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট দফতর।