টানা চার মেয়াদের প্রথম বছরে গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন শেখ হাসিনা। দেশ ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন ভারতে। ছাত্রজনতার ঐতিহাসিক আন্দোলনে দেশে রচিত হলো নতুন ইতিহাস।
দীর্ঘদিন ধরে জেল জুলুম মামলা ও নিপীড়নের শিকার বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার পতনে হাফ ছেড়ে বেঁচেছেন। তাদের জেল থেকে মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
গণআন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সাজা থেকে পুরোপুরি মুক্তি পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
চেয়ারপারসনকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জাফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময় তিনি মহাসচিবের মাধ্যমে দেশবাসীকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে শুভেচ্ছা জানান ফখরুল। এ সময় দলীয় প্রধানকে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন তিনি।
এ সময় দেশের মানুষকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
বার্তার বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ম্যাডাম অসুস্থ। তাকে সব সময় আমরা দেশের পরিস্থিতি অবহিত করছি। তিনি দেশবাসীকে এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য বলেছেন।
দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ। সেখানে বলা হয়, সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেছেন।
এর আগে খালেদা জিয়া ২০২০ সাল থেকে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্ত থাকলেও এখন দুর্নীতি মামলার সাজা থেকে থেকে পুরোপুরি মুক্তি পেলেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। ওই বছরের অক্টোবরে হাই কোর্টে আপিল শুনানি শেষে সাজা বেড়ে হয় ১০ বছর।
এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও আরও সাত বছরের সাজা হয় বিএনপি নেত্রীর। তিনি তখনও পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের কারাগারে ছিলেন।
বিএনপি বরাবরই বলে আসছে, আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবে ‘মিথ্যা’ মামলায় তাদের নেত্রীকে কারাবন্দি করা হয়েছে তাকে রাজনীতি থেকে বিদায় করার জন্য।
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস ও হৃদরোগে ভুগছেন। সাময়িক মুক্তির পর তাকে কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য পরিবারের তরফ থেকে বেশ কয়েকবার আবেদন করা হলেও ওই শর্তের যুক্তি দিয়েই বার বার তা প্রত্যাখ্যান করেছে শেখ হাসিনার সরকার।
তবে মুক্তি পাওয়ায় খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা কাটল। ইতিমধ্যে তিনি ভিসাও পেয়ে গেছেন।