লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নাকচ নেতানিয়াহুর

লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যেকোনও ধরনের যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন, ইসরায়েল গাজা আগ্রাসনের জন্য যেসব লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল তার সবগুলো অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত তেল আবিব যুদ্ধ বন্ধ করবে না।
হামাসের হাতে আটক ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্ত করে নেওয়ার জন্য যখন তেল আবিবের ওপর অভ্যন্তরীণ চাপ তুঙ্গে রয়েছে এবং গাজা উপত্যকায় একটি যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা করে বন্দিদের মুক্ত করার লক্ষ্যে যখন প্রচেষ্টা চলছে তখন এ বক্তব্য দিলেন নেতানিয়াহু।
গত ৭৫ দিন ধরে গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে তেল আবিবের গণহত্যামূলক যুদ্ধ চলছে। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে বড় ধরনের অভিযান চালায় গাজা-ভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো। ওই দিন থেকেই গাজার ওপর নির্বিচার বোমা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এতে এখন পর্যন্ত ২০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৪ হাজারের বেশি নারী ও শিশু।
নেতানিয়াহু বুধবার এক বিবৃতিতে বলেন, “যেসব লক্ষ্যে গাজায় অভিযান চলছে তার একটি হচ্ছে হামাসের বিলুপ্তি। গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস বর্তমানে ওই উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের সকল জিম্মির মুক্তি না হওয়া পর্যন্তও গাজা যুদ্ধ বন্ধ হবে না। গাজা উপত্যকা থেকে কেউ যেন আর কোনওদিন ইসরায়েলের জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে না পারে সেটি নিশ্চিত করাকেও গাজা আগ্রাসনের অন্যতম লক্ষ্য বলে উল্লেখ করেন নেতানিয়াহু।
তবে নেতানিয়াহুর ওই বিবৃতি প্রকাশের কয়েক ঘণ্টা পর লেবাননের রাজধানী বৈরুতে এক সংবাদ সম্মেলন করেন হামাস নেতা ওসামা হামদান। তিনি বলেন, ইসরায়েল এখন পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় তার ঘোষিত একটি লক্ষ্যও অর্জন করতে পারেনি এবং ভবিষ্যতেও পারবে না।
তিনি বলেন, গাজায় আগ্রাসন পুরোপুরি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কোনও ইসরায়েলি বন্দি মুক্তি পাবে না। ওদিকে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার আলোচনা করতে হামাসের পলিটব্যুরো প্রধান ইসমাইল হানিয়া ইতোমধ্যে কাতার থেকে মিশরে পৌঁছেছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধ বন্ধ না হলে হামাস কোনেও বন্দিকে মুক্তি দেবে না- একথা নিশ্চিত। তবে সে যুদ্ধ সাময়িকভাবে বন্ধ হবে নাকি স্থায়ীভাবে আগ্রাসন বন্ধ করে ইসরায়েলি সেনারা গাজা থেকে ফিরে যাবে সেটি নিয়েই মূলত এখন কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলছে।