অর্থনীতি ডেস্কঃ আইএফআইসি ব্যাংকের পল্টন শাখায় টাকা জমা দিতে যান আইডিয়াজ নামের একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং অফিসার মো. আজিম (২১)। তার কাছে ২১ লাখ ৫ হাজার টাকা ছিল।
এরমধ্যে এক লাখ টাকা আইএফআইসি ব্যাংকে জমা দেন। অবশিষ্ট ২০ লাখ ৫ হাজার টাকা এক্সিম ব্যাংকের পল্টন শাখায় জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ঠিক তখনই ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) দুই পোশাকধারী কনস্টেবল ব্যাংকে প্রবেশ করেন।
আজিমকে তারা জোর করে বাইরে নিয়ে যান। বলতে থাকেন, ‘টাকাগুলো অবৈধ’। ভয় দেখিয়ে টাকাভর্তি ব্যাগটি নিয়ে নেন তারা। এরপর ওই কর্মকর্তাকে একটি মোটরসাইকেলে তুলে নেন। শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে মুগদা মেডিকেলের সামনে নামিয়ে দেন।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে পুলিশ সদস্যদের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে ঘটনাটি আইডিয়াজের স্বত্বাধিকারী আবদুল্লাহ আল মামুনকে (৩২) জানান তার মার্কেটিং অফিসার। এরপর দ্রুত পুলিশকে তারা ঘটনাটি জানান।
এদিনই রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা হয়। মামলা নং-৪৭। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পল্টন থানা-পুলিশ ও ডিবির মতিঝিল জোনাল টিম। এরপর সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দুই পুলিশ কনস্টেবলসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেন তারা। উদ্ধার করা হয় ছিনতাই হওয়া ২০ লাখ টাকা।
আটক হওয়া দুই পুলিশ সদস্য হলেন মাহবুব ও আশিক। তারা ডিএমপির পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম-পূর্ব) বিভাগে কর্মরত ছিলেন। গ্রেফতার অন্য তিনজন হলেন ব্যাংকের সামনের টং দোকানদার হৃদয়, মোটরসাইকেলের মালিক শাহজাহান এবং রাসেল। এরমধ্যে শাহজাহান টাকা ছিনতাই হওয়া প্রতিষ্ঠান আইডিয়াজ’র কর্মচারী। সে-ই এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী।
আইডিয়াজ’র স্বত্বাধিকারী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, তিনি দীর্ঘদিন পল্টন এলাকায় ব্যবসা পরিচালনা করছেন। ব্যবসার কাজে টাকাগুলো ব্যবহার হতো। দুই পুলিশ সদস্য এগুলো ‘অবৈধ টাকা’ বলে ছিনতাই করেন। পরে অন্য পুলিশ সদস্যরা টাকা উদ্ধার করেন। ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সূত্র জানায়, ঘটনার পর মতিঝিল জোনের সহকারী কমিশনার গোলাম রুহানীর নেতৃত্বে থানা পুলিশ সেখানে যায়। এরইমধ্যে উপস্থিত হয় ডিবি-মতিঝিলের একটি দলও। তারা সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করেন।
পল্টন থানার ওসি মো. সালাহউদ্দীন মিয়া বলেন, মূলত শাহজাহান এই ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। এজন্য সে হৃদয়ের শরণাপন্ন হয়। হৃদয় আবার তার বন্ধু কনস্টেবলের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এই তিনজনের বাইরে শাহজাহান ও রাসেল ঘটনায় জড়িত। তারা টাকা নিয়ে সটকে পড়ে। উদ্ধার হওয়া ২০ লাখ টাকার মধ্যে ১০ লাখ টাকা দুই কনস্টেবল থেকে এবং বাকি টাকা শাহজাহান ও রাসেলের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। তারা বাসাবোতে অবস্থান করছিলেন।