টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলায় অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদী বা জলাশয়ের তলদেশের মাটি তুলে নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র। এতে পরিবেশ ও প্রকৃতির উপর নেমে আসছে মারাত্মক বিপর্যয় । নদীগর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে বাড়ি- ঘরসহ বহু সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা।
বাসাইল উপজেলার প্রায় ৮০ টিরও অধিক স্থানে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় অসাধু প্রভাবশালী চক্র। আইনের তোয়াক্কা না করে ৫/৬বছর যাবত চলছে তাদের এই অবৈধ কার্যক্রম। এতে উপজেলার বিলপাড়া, কাশিল,আদাজান,একডালা, দাপনাজোড়, হাদিরা পাড়া, কাঞ্চনপুর, কামুটিয়াসহ বিভিন্ন গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ,ব্রিজ, রাস্তাঘাটসহ বহু সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা নদীগর্ভে চলে গেছে।
ভাঙনের শিকার হয়ে রাস্তায় কিমবা অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ বাস্তুহারা পরিবারগুলো। মানবেতর জীবন-যাপন করলেও প্রতিবাদের সাহস নেই তাদের প্রভাবশালি ড্রেজার মালিকদের বিরুদ্ধে ।
উপজেলায় বংশাই, ঝিনাই, নাঙ্গুলিয়া নদীসহ প্রায় ১০/১৫টি খাল ও জলাশয় রয়েছে। এসব জলাশয় কিমবা নদীতে অবাধে-অপরিকল্পিতভাবে পানির তলদেশ থেকে বালু উত্তোলনের ফলে পরিবেশ ও প্রকৃতির উপর নেমে আসছে মারাত্মক বিপর্যয়। বহু আবাদি জমি হারিয়ে কৃষকরা হয়ে পড়ছে দিশেহারা। প্রশাসনের বারবার প্রচেষ্টা সত্বেও থামানো যাচ্ছে এইসব প্রভাবশালীদের ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী জানান- অসাধু ড্রেজার মালিকদের কারণে বাসাইল উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম হুমকির সম্মুখীন। নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে প্রায় দুইশোর অধিক ঘরবাড়ি ও বহু আবাদি জমি। তাছাড়া স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ,ব্রিজ, রাস্তাঘাট , বাজারসহ বহু সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা নদীগর্ভে চলে গেছে কিমবা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ড্রেজার মালিকদের কিছু বলতে গেলেই তারা হুমকি-ধামকি, গালিগালাজসহ নানাভাবে অত্যাচার করে। আমরা এলাকার সাধারণ মানুষ একদম অসহায়।
বাসাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাহিয়ান নূরেন জানান, প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত আছে। ড্রেজার মালিকদের গ্রেফতার করতে পারলে তাদেরকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাৎক্ষনিকভাবে সাজা দেয়া হচ্ছে। ড্রেজারগুলো ধ্বংস করে অকার্যকর করা হচ্ছে।
নদী অববাহিকার উপজেলা বাসাইল। ড্রেজারের কারণে বিরুপ প্রভাব পড়ছে বাসাইলের পরিবেশ ও প্রকৃতির উপর ।এ ব্যাপারে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্টরা।