মধুমতি গিলে খাচ্ছে বোয়ালমারীর লংকারচর গ্রাম, উৎকন্ঠায় ৩৫০ পরিবার

খন্দকার আব্দুল্লাহ,ফরিদপুর প্রতিনিধি:

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত মধুমতি নদীর কোল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে লংকারচর গ্রাম। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম এলেই ফুলেফেঁপে ওঠা খরস্রোতা মধুমতির কোপানলে পরে নদী বিধৌত এ গ্রামটি। রাক্ষসী মধুমতি কেঁড়ে নেয় গ্রামবাসীদের ঘর-বাড়ি, কৃষি জমি,বাগান সহ নানা সহায়-সম্পত্তি।সর্ব শান্ত হয়ে পথে বসে অসংখ্য পরিবার। উন্মত্ত মধুমতির রুদ্রতায় বদলে যাচ্ছে লংকারচরের মানচিত্র। ক্রমান্বয়ে ছোট হয়ে যাচ্ছে জনবহুল গ্রামটির আয়তন।

সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়,বরাবরের ন্যায় এবারও মধুমতি আঘাত হেনেছে লংকারচর গ্রামে। প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে চলছে  নদীর তান্ডব। ইতিমধ্যে ২০টি পরিবারে প্রায় ৩০ একর জমি নদীগর্ভে  বিলীন হয়ে গেছে। এর মধ্যে ২ টি বসত বাড়ি,একাধীক মেহেগনী,কলাগাছের বাগান সহ মুল্যবান কৃষি জমি রয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্থ রগুনাথ মন্ডল বলেন,নদী আমাদের ঘরবাড়ি, জমি,বাগান কেঁড়ে নিয়েছে। নিঃস্ব-রিক্ত  হয়ে আমরা এখন অস্তিত্বের সংকটে ভুগছি। শুধু আমরাই নয় নদীতিরবর্তী গ্রামের প্রায় সাড়ে তিনশত পরিবার চরম ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে। যে কোন সময় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে তাদের ঘরবাড়ি, সহায় সম্পদ। ফলে সিমাহীন উদ্বেগ-উৎকন্ঠার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন তারা। এলাকার মল্লিক মন্ডল বলেন,ব্যাপক আতঙ্ক-উৎকন্ঠার মধ্যে জীবন কাটাচ্ছি। ভয়ে রাতে ঘুমোতে পারছিনা। কখন যেন ঘরবাড়ি নিয়ে নদীতে ডুবে যাই। তিনি আরো বলেন,প্রতি বছর লংকারচর গ্রাম ভাংছে। আমাদের জমি-জমা খেয়ে নদী বড় হচ্ছে,আর ছোট হচ্ছে লংকারচর গ্রাম। কিন্তু আমাদের এ দূর্দশার খবর কেউ রাখেনা।  জনপ্রতিনিধি বা সরকারী কোন  কর্তৃপক্ষ কেউ এখন পর্যন্ত আমাদের এ দুঃখকষ্ট দেখার জন্য আসেনি। নদী নিয়ন্ত্রণে দ্রুত ব্যাবস্থা না নিলে পুরো লংকার চরের বড় অংশই নদীতে হারিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন মল্লিক মন্ডল। ইউপি সদস্য আব্দুল  হাকিম মোল্যা বলেন,প্রতিবছরই লংকারচর ভাংছে। অনেক পরিবার উদ্বাস্তু হচ্ছে। কিন্তু চেয়ে-চেয়ে দেখা ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার নেই। নদী শাসনের উদ্যোগের অভাবে লংকারচর গিলছে মধুমতি। এব্যাপারে তরিত পদক্ষেপ নেয়ার দাবী জানান ইউপি সদস্য।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঘোষপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ফারুক হোসেন বলেন,বোয়ালমারী উপজেলায় কেবল আমার ইউনিয়নেই দুটি গ্রাম লংকারচর এবং চরছাতিয়ানি ভাঙ্গন কবলিত। এর অনেক জমি,ঘর-স্থাপনা মধুমতির পেটে চলে গেছে। সাধ থাকলেও সাধ্যের অভাবে কিছু করতে পারছিনা। নদী শাসনের ব্যাবস্থা না থাকায় গ্রাম দুটির অস্ত্বিত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। জনপদ দুটি রক্ষায় দ্রুত উর্ধতন কর্তৃপক্ষেপ হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি